১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিশু হত্যাতেও সহানুভূতি দেখাল না ওরা

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ৯ অগাস্ট ২০২২, মঙ্গলবার
  • / 6

পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ ইসরাইলের হামলায় নিহত হয়েছে ৫০-এর বেশি ফিলিস্তিনি। নিহতদের মধ্যে রয়েছে বহু শিশু ও মহিলা। আর এই আক্রমণ নিয়ে সরব হলেন সংযুক্ত আরব আমীরশাহীর রাজকুমারী হেন্দ বিনতে ফয়সাল আল-কাসেমী। নিরীহ ফিলিস্তিনিদের উপর গত শুক্রবার ইসরাইলের আক্রমণ হওয়ার পর পরই হেন্দ তাঁর ট্যুইটারে একের পর এক মন্তব্য করতে থাকেন।

শিশু হত্যাতেও সহানুভূতি দেখাল না ওরা

নিরীহ মুসলিম ও মহিলা শিশুদের উপর যায়নবাদী ইহুদিদের আক্রমণকে বর্বর আখ্যা দিয়ে তিনি লেখেন, গাজায় শিশুদের হত্যাকে ওদের মিডিয়া নির্লজ্জভাবে যুক্তিযুক্ত মনে করছে। তিনি লিখেছেন, ওইসব মিডিয়া আপনাদের নিয়ন্ত্রণে, তারা নিহত শিশুদের প্রতি এক আউন্সও সহানুভূতি দেখাচ্ছে না।

 

বরং তারা দাবি করছে ওইসব শিশুদের টেররিস্ট বাবা তাদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছিল। অপর এক ট্যুইটে আমীর শাহীর এই রাজকুমারী লিখেছেন, গত ২৫ বছরে ১ কোটি ২৫ লক্ষ মুসলিম নিহত হয়েছে, আপনি কি শুনেছেন তাদের জন্য কেউ কোনও বই লিখেছে, মুভি তৈরি করেছে, কেউ এমন আইন বানিয়েছে যে, তাদের হত্যা নিয়ে সহানুভূতি না দেখানোকে অমানবিক আখ্যা দেওয়া হয়েছে। ৬৬ লক্ষ ইহুদি নিহত হয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়।

শিশু হত্যাতেও সহানুভূতি দেখাল না ওরা

উল্লেখ্য, নিহত ইহুদীদের প্রতি সহানুভূতি না দেখানোকে অমানবিক বিবেচনা করা হবে এমন আইন আনা হয়েছে। হেন্দ উইঘুর মুসলিম নিয়ে মুখ খুলেছেন ইসলামোফোবিয়া নিয়ে লিখেছেন। ইতিপূর্বেও ফিলিস্তিন নিয়ে সরব হয়েছেন তিনি। যদিও আরব আমীরশাহী সম্প্রতি ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। নিজের পরিবার ও নিজের দেশের সরকার বিরূপ হতে পারে জেনেও তিনি ইসরাইলের আক্রমণের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানিয়ে যাচ্ছেন।

 

তিনি লিখেছেন, ওরা ফিলিস্তিনিদের ঘর-বাড়ি কেড়ে নিচ্ছে। সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে, বোম্বিং করে চলেছে, আর আমেরিকার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে ইহুদিদের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। আমরা কেঁদেছি জার্মানিতে ইহুদীদের উপর নাৎসীদের অত্যাচার নিয়ে। আর এটা খুবই হাস্যকর যে, সেই ইহুদীরা এখন কাঁদছে না, কেননা ফিলিস্তিনিদের ওপর বর্বর নারকীয় অত্যাচার তারাই করছে। আরবরা ঘর ছেড়ে চলে না গেলে তাদের ঘর কেড়ে নাও, সন্ত্রাস সৃষ্টি করে দাও আর বোমা ফেলতে থাকো। মৃতরা তো আর কথা বলতে পারবে না, কাঁদতে পারবে না।

শিশু হত্যাতেও সহানুভূতি দেখাল না ওরা

আমেরিকা ও ইহুদী লবীর মিডিয়াকে কটাক্ষ করে তিনি লিখেছেন, ইসরাইল তো ফিলিস্তিনে ‘সেলফ ডিফেন্স’ করছে, আত্মরক্ষার অধিকার তাদের রয়েছে, তারা তো ইসলামী জিহাদের বিরুদ্ধে ‘ন্যায়সঙ্গতভাবে’ লড়ছে। তাই নিরীহ নাগরিক মহিলা ও শিশুদের হত্যা একেবারেই আইনসঙ্গত ও যুক্তিপূর্ণ তাদের কাছে। বাহ্, বাহ্, কি সুন্দর যুক্তি!

 

সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ব্যবসায়ী, সম্পাদক ও লেখিকা রাজকুমারীর ফলোয়ারের সংখ্যা বিশাল এবং তাঁর এই ট্যুইটার মন্তব্য সাড়া ফেলেছে আরব দুনিয়ায়। সউদি আরব বহু সময় নীরব থাকার পর প্রথম ইসরাইলের বর্বর আক্রমণের নিন্দা জানায়। কুয়েত, কাতারও সামিল হয় ইসরাইল নিন্দায়। তারপর জর্ডন, মিশর উদ্যোগ নেয় যুদ্ধ বিরতিতে ইসরাইলকে বাধ্য করতে। রবিবার রাত থেকে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে। ইতিমধ্যে ৫১ জন ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। আর নষ্ট হয়েছে ৬৫০টি ঘর।

শিশু হত্যাতেও সহানুভূতি দেখাল না ওরা

খান ইউনুস, রাফা, আল-সুজাইয়া, জাবালিয়া ক্যাম্প এবং সেন্ট্রাল গাজার আবাসিক এলাকায় বোমা ফেলেছে ইসরাইল। রাষ্ট্রসংঘের পক্ষ থেকে আশ্রয়হীনদের জন্য সাময়িক আশ্রয় শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ সংস্থা হামাস ও ইসলামিক জিহাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আমাদের নাগরিকদের টার্গেট করছে আমরা প্রতিরোধ করছি, দুশমনদের বাধা দিতে আমরা প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছি। আরও উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনিদের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি রকেট ছোঁড়া হয় ইসরাইল লক্ষ্য করে। কিন্তু আমেরিকার পাঠানো ‘আয়রন ডোম’-এর মাধ্যমে সেই সব রকেট আকাশপথেই নষ্ট করে দেওয়া হয়।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

শিশু হত্যাতেও সহানুভূতি দেখাল না ওরা

আপডেট : ৯ অগাস্ট ২০২২, মঙ্গলবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ ইসরাইলের হামলায় নিহত হয়েছে ৫০-এর বেশি ফিলিস্তিনি। নিহতদের মধ্যে রয়েছে বহু শিশু ও মহিলা। আর এই আক্রমণ নিয়ে সরব হলেন সংযুক্ত আরব আমীরশাহীর রাজকুমারী হেন্দ বিনতে ফয়সাল আল-কাসেমী। নিরীহ ফিলিস্তিনিদের উপর গত শুক্রবার ইসরাইলের আক্রমণ হওয়ার পর পরই হেন্দ তাঁর ট্যুইটারে একের পর এক মন্তব্য করতে থাকেন।

শিশু হত্যাতেও সহানুভূতি দেখাল না ওরা

নিরীহ মুসলিম ও মহিলা শিশুদের উপর যায়নবাদী ইহুদিদের আক্রমণকে বর্বর আখ্যা দিয়ে তিনি লেখেন, গাজায় শিশুদের হত্যাকে ওদের মিডিয়া নির্লজ্জভাবে যুক্তিযুক্ত মনে করছে। তিনি লিখেছেন, ওইসব মিডিয়া আপনাদের নিয়ন্ত্রণে, তারা নিহত শিশুদের প্রতি এক আউন্সও সহানুভূতি দেখাচ্ছে না।

 

বরং তারা দাবি করছে ওইসব শিশুদের টেররিস্ট বাবা তাদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছিল। অপর এক ট্যুইটে আমীর শাহীর এই রাজকুমারী লিখেছেন, গত ২৫ বছরে ১ কোটি ২৫ লক্ষ মুসলিম নিহত হয়েছে, আপনি কি শুনেছেন তাদের জন্য কেউ কোনও বই লিখেছে, মুভি তৈরি করেছে, কেউ এমন আইন বানিয়েছে যে, তাদের হত্যা নিয়ে সহানুভূতি না দেখানোকে অমানবিক আখ্যা দেওয়া হয়েছে। ৬৬ লক্ষ ইহুদি নিহত হয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়।

শিশু হত্যাতেও সহানুভূতি দেখাল না ওরা

উল্লেখ্য, নিহত ইহুদীদের প্রতি সহানুভূতি না দেখানোকে অমানবিক বিবেচনা করা হবে এমন আইন আনা হয়েছে। হেন্দ উইঘুর মুসলিম নিয়ে মুখ খুলেছেন ইসলামোফোবিয়া নিয়ে লিখেছেন। ইতিপূর্বেও ফিলিস্তিন নিয়ে সরব হয়েছেন তিনি। যদিও আরব আমীরশাহী সম্প্রতি ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। নিজের পরিবার ও নিজের দেশের সরকার বিরূপ হতে পারে জেনেও তিনি ইসরাইলের আক্রমণের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানিয়ে যাচ্ছেন।

 

তিনি লিখেছেন, ওরা ফিলিস্তিনিদের ঘর-বাড়ি কেড়ে নিচ্ছে। সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে, বোম্বিং করে চলেছে, আর আমেরিকার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে ইহুদিদের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। আমরা কেঁদেছি জার্মানিতে ইহুদীদের উপর নাৎসীদের অত্যাচার নিয়ে। আর এটা খুবই হাস্যকর যে, সেই ইহুদীরা এখন কাঁদছে না, কেননা ফিলিস্তিনিদের ওপর বর্বর নারকীয় অত্যাচার তারাই করছে। আরবরা ঘর ছেড়ে চলে না গেলে তাদের ঘর কেড়ে নাও, সন্ত্রাস সৃষ্টি করে দাও আর বোমা ফেলতে থাকো। মৃতরা তো আর কথা বলতে পারবে না, কাঁদতে পারবে না।

শিশু হত্যাতেও সহানুভূতি দেখাল না ওরা

আমেরিকা ও ইহুদী লবীর মিডিয়াকে কটাক্ষ করে তিনি লিখেছেন, ইসরাইল তো ফিলিস্তিনে ‘সেলফ ডিফেন্স’ করছে, আত্মরক্ষার অধিকার তাদের রয়েছে, তারা তো ইসলামী জিহাদের বিরুদ্ধে ‘ন্যায়সঙ্গতভাবে’ লড়ছে। তাই নিরীহ নাগরিক মহিলা ও শিশুদের হত্যা একেবারেই আইনসঙ্গত ও যুক্তিপূর্ণ তাদের কাছে। বাহ্, বাহ্, কি সুন্দর যুক্তি!

 

সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ব্যবসায়ী, সম্পাদক ও লেখিকা রাজকুমারীর ফলোয়ারের সংখ্যা বিশাল এবং তাঁর এই ট্যুইটার মন্তব্য সাড়া ফেলেছে আরব দুনিয়ায়। সউদি আরব বহু সময় নীরব থাকার পর প্রথম ইসরাইলের বর্বর আক্রমণের নিন্দা জানায়। কুয়েত, কাতারও সামিল হয় ইসরাইল নিন্দায়। তারপর জর্ডন, মিশর উদ্যোগ নেয় যুদ্ধ বিরতিতে ইসরাইলকে বাধ্য করতে। রবিবার রাত থেকে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে। ইতিমধ্যে ৫১ জন ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। আর নষ্ট হয়েছে ৬৫০টি ঘর।

শিশু হত্যাতেও সহানুভূতি দেখাল না ওরা

খান ইউনুস, রাফা, আল-সুজাইয়া, জাবালিয়া ক্যাম্প এবং সেন্ট্রাল গাজার আবাসিক এলাকায় বোমা ফেলেছে ইসরাইল। রাষ্ট্রসংঘের পক্ষ থেকে আশ্রয়হীনদের জন্য সাময়িক আশ্রয় শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ সংস্থা হামাস ও ইসলামিক জিহাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আমাদের নাগরিকদের টার্গেট করছে আমরা প্রতিরোধ করছি, দুশমনদের বাধা দিতে আমরা প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছি। আরও উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনিদের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি রকেট ছোঁড়া হয় ইসরাইল লক্ষ্য করে। কিন্তু আমেরিকার পাঠানো ‘আয়রন ডোম’-এর মাধ্যমে সেই সব রকেট আকাশপথেই নষ্ট করে দেওয়া হয়।