পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: মজলুম ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে মিছিল, স্লোগান ও বিক্ষোভের জের! ডোনাল্ড TRUMP-এর রোষানলের স্বীকার ভারতীয় ছাত্রী রঞ্জনি শ্রীনিবাসন। ‘প্রিয় বন্ধু’ ইসরাইলের বিরুদ্ধে আমেরিকায় পাঠরত রঞ্জনির এহেন কর্মকাণ্ডে বেজায় নারাজ ট্রাম্প ২.০ প্রশাসন (TRUMP)। যার জেরে সম্প্রতি কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারতীয় ছাত্রী রঞ্জনি শ্রীনিবাসনের ভিসা বাতিল করে দেয় তারা। এই বিষয়ে মার্কিন স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে ওই ছাত্রীকে ১১ মার্চ পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর উন্নয়ন বিভাগে গবেষণারত ওই ছাত্রী ভিসা পুনর্নবীকরণের জন্য বহুবার আবেদন করেও কোনও লাভ হয়নি। ওই বিভাগটি সরাসরি মার্কিন আভ্যন্তরীণ সুরক্ষা দফতরের অধীনে। এই আবহে উপরোল্লিখিত সরকার (TRUMP) তাঁকে ডিপোর্ট করার আগেই নিজেই আমেরিকা ছাড়েন মেধাবী ডক্টরেট ছাত্রী । জানা গেছে, পোষ্য বিড়ালটিকে বন্ধুর কাছে ছেড়ে দিয়ে আমেরিকা ত্যাগ করেছিলেন তিনি। শেষ মুহূর্তে ফ্লাইট বুক করেছিলেন। এমনকি ব্যবহৃত সব কিছুই ভাড়া বাড়িতে ফেলে আসেন।
উল্লেখ্য, ইসরাইল-গাজা যুদ্ধের মাঝে আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিন-পন্থী বিক্ষোভ নয়া কিছু নয়। মজলুল ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়িয়ে বর্বর, রক্তপিপাসু ইসরাইলের বিরুদ্ধে বরাবরই সুর চড়িয়েছে আমেরিকার পড়ুয়ামহল। মাঝেমধ্যেই ফিলিস্তিনকে ‘মুক্ত’ করার দাবিতে পোস্টার, প্ল্যাকার্ড হাতে পড়ুয়াদের মিছিলে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। তবে কারা এসব করছে, তাঁদের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে কি করা হবে গদিতে বসার আগে থেকেই নীলনকশা বানিয়ে নিয়েছিলেন ট্রাম্প সরকার। তাই ক্ষমতার কুর্সিতে বসেই প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর দমাতে উঠেপড়ে লেগেছে ইসরাইলের ‘প্রিয় বন্ধু’ ট্রাম্প। সেভাবেই রঞ্জনী শ্রীনিবাসন নামে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি-র ছাত্রী নজরে পড়েছিল।
read more: Imam Umer Ahmed Ilyasi ইসরাইলি রাষ্ট্রদূতের বাড়িতে চব্য-চোষ্য দিয়ে ‘ইফতার’ সারলেন
আমেরিকা ত্যাগের পর সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রঞ্জনি বলেন, আমেরিকার পরিবেশ খুব অস্থিতিশীল এবং বিপজ্জনক বলে মনে হচ্ছিল। তাই সব কিছু ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য কানাডায় চলে আসি। এর আগে লাগাতার এক সপ্তাহ ধরে ফেডারেল এজেন্টরা তাঁর অ্যাপার্টমেন্টে এসেছিলেন।
কিন্তু কে এই রঞ্জনি? এফ-১ ভিসায় পড়াশোনার জন্যে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন এই ভারতীয়। বর্তমানে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নগর পরিকল্পনায় ডক্টরেট করছিলেন রঞ্জনি। রঞ্জনি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এর আগে নগর পরিকল্পনায় এমফিল সম্পন্ন করেছেন। এছাড়া তিনি স্কুল অফ আর্কিটেকচারের স্নাতক। শুধু তাই নয়, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। সিইপিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলর অফ ডিজাইন কোর্সও করেছেন রঞ্জনি।
It is a privilege to be granted a visa to live & study in the United States of America.
When you advocate for violence and terrorism that privilege should be revoked and you should not be in this country.
I’m glad to see one of the Columbia University terrorist sympathizers… pic.twitter.com/jR2uVVKGCM
— Secretary Kristi Noem (@Sec_Noem) March 14, 2025
নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় ওয়াগনর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, তিনি ভারতের প্রাক-নগরায়নের শহরগুলি নিয়ে অধ্যয়ন করছিলেন। শ্রমিকদের রাজনৈতিক অর্থনীতির ওপর তাঁর বিশেষ নজর ছিল। এছাড়া বর্তমান সময়ের কর্মসংস্থানের অভাবের দিকেও নজর দিচ্ছিলেন তিনি।
এদিকে আমেরিকার বিরুদ্ধে রঞ্জনির অভিযোগ অস্বীকার করেছে মার্কিন কর্মকর্তারা। পাশাপাশি তারা জানিয়েছেন ২০২৫ সালের ৫ মার্চ স্টেট ডিপার্টমেন্ট রঞ্জনির ভিসা বাতিল করে। ১১ মার্চ সিবিপি হোম অ্যাপ ব্যবহার করে তিনি স্বেচ্ছায় নির্বাসনে গিয়েছেন। সেই ভিডিয়ো ফুটেজ পেয়েছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ। তারা জানিয়েছে, এটা দেখে ভালো লাগছে যে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রী নিজেই দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন, তাঁকে ফেরত পাঠাতে হচ্ছে না।