২৫০ টাকা ফিজ দিতে দু’দিন দেরি, শিক্ষকের মারে মৃত্যু দলিত ছাত্রের

- আপডেট : ২০ অগাস্ট ২০২২, শনিবার
- / 10
পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: দেশে বর্ণবৈষম্য ও জাতপাতের চরম বিভীষিকার আরও এক ঘটনা সামনে এলো উত্তরপ্রদেশে। ১৪ বছরের এক দলিত ছাত্রকে নির্মমভাবে পেটানো হল স্কুল ফিজ জমা দিতে দু’দিন দেরি হওয়ায়। তাও আবার মাত্র ২৫০ টাকা। ২৫০ টাকার জন্য এক ছাত্রের মৃত্যু নিয়ে তীব্র অসন্তোষ দলিত ও আদিবাসী মহলে।
উত্তরপ্রদেশের শীবস্তি জেলার ঘটনা। উচ্চ মাধ্যমিক এক প্রাইভেট স্কুলের উচ্চবর্ণের শিক্ষক অনুপম পাঠকের বিরুদ্ধে দলিত ছাত্রকে মারধরের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। নির্মম প্রহারে অসুস্থ ছাত্রকে প্রথমে বাহরাইচ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১০ দিন ধরে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করার পর ১৮ আগস্ট মৃত্যু হয় ওই ছাত্রের।
মৃত্যুর পর ছাত্রের পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেন।মৃত ছাত্রের দাদা জানান, তার ভাই প্রথমে বাড়ি এসে জানায় ফিজ জমা না দেওয়ায় তাকে মারধর করা হয়েছে। সেসময় আমাদের বাড়িতে টাকা ছিল না। পরে আমি স্কুলের প্রিন্সিপাল সাহেবের কাছে গিয়ে জানাই অনলাইনে টাকা জমা দিয়ে দেব এবং পর পর দু’মাসের টাকা পাঠিয়ে দিই, একদিন পর।
কিন্তু ভাইকে আর ফিরে পেলাম না। মার খেয়ে খুব অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
পুলিশ অফিসার অরবিন্দ কুমার সংবাদমাধ্যমকে জানান, এক ছাত্রের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মৃতের পরিবার অভিযোগ দায়ের করেছে। বলা হয়েছে, স্কুলে ওই ছাত্রকে মারধর করা হয়েছে। আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি। মৃত ছাত্রের দাদা রাজেশ কুমার বলেন, ভাইকে ভালো স্কুলে পাঠিয়েছিলাম পড়াশোনা করার জন্য। ফিজ জমা দিতে ২/৩ দিন দেরি হয়েছিল।
২৫০ টাকার জন্য এইভাবে বেরহমির সঙ্গে মারধর করা হল। আমি জানতে পেরে দু’মাসের মাইনে একসঙ্গে জমা করে দিয়েছি। ছাত্রের মৃত্যুর পর বিক্ষোভ শুরু হলে পুলিশ ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে।
উল্লেখ্য, ক’দিন আগে রাজস্থানে স্কুলে শিক্ষকের জলের পাত্র ছুঁয়ে ফেলার অপরাধে এক দলিত ছাত্রকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয় এক স্কুলের মধ্যে। জাতপাতের বিভীষিকা কতটা চরমে উঠেছে এই দু’টি ছাত্র হত্যার ঘটনা তার জ্বলন্ত প্রমাণ। শিক্ষিত সম্প্রদায়ের মধ্যেও বিদ্বেষের পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে। দৌপদী মুর্মুকে রাষ্ট্রপতি বানাবার পর ধারণা করা হয়েছিল হয়তো এবার দলিত আদিবাসীদের জীবনে সুদিন ফিরে আসছে। কিন্তু দলিত ছাত্রের নৃশংসভাবে মৃত্যুর পর সেই ধারণা পালটে যাচ্ছে। ক্ষোভে ফুঁসছে শ্রীবস্তির দলিত সমাজ।