২০ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আনিস কাণ্ডে নয়া মোড়, সাসপেন্ড আমতা থানার এএসআই সহ ২ পুলিশকর্মী

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২২, মঙ্গলবার
  • / 14

পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ যতই দিন যাচ্ছে ততই আমতার আনিস খান হত্যারহস্যের জট আরও ঘোরালো হচ্ছে। এদিকে আজ ভবানীভবনে তলব করা হয়েছে, আমতা থানার ওসি ও সেকেন্ড অফিসারকে।

ছাত্র নেতা খুনে আমতা থানার তিন পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হল। সাসপেন্ড হওয়া ৩ পুলিশকর্মীর নাম হোমগার্ড কাশীনাথ বেরা,  এএসআই নির্মল দাস ও কনস্টেবল জিতেন্দ্র হেমব্রম। এই তিনজনই ঘটনার দিন আরটি ভ্যানের দায়িত্বে ছিলেন। কর্তব্যে গাফিলতি ও নিহতের পরিবারের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারের জন্য এই সাসপেন্ড বলে জানা গেছে।

 

তবে রাজ্যের এই পদক্ষেপে সন্তুষ্ট নয়  আনিসের পরিবার। তাদের পরিবারে পক্ষ থেকে নিহত ছাত্র নেতার বাবা জানিয়েছেন, আজ যাদের সাসপেন্ড করা হল তাদের অন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হবে। আমি চাই এই ঘটনার সিবিআই তদন্ত হোক।

আনিসের  বাবাকে সাংবাদিকরা জিজ্ঞাসা করেন, ‘তিনি কি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যাবেন? প্রশ্নের উত্তরে আনিসের বাবা জানান, আমার ছেলে খুন হয়েছে, আমি কেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যাব?

মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আনিসের যোগাযোগ থাকার বক্তব্যও উড়িয়ে দেন তিনি।

 

এদিকে গতকালই ক্যাবিনেট বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, আনিসের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল। এদিকে আজ সেই কথাই উড়িয়ে দিলেন নিহত ছাত্র নেতার বাবা।

 

সাসপেন্ডের ঘটনায় বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, ‘কোনও ঘটনার এত তাড়াতাড়ি তদন্ত হয় না। তদন্ত না করেই তিন পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড করে দেওয়া হল।’

অন্যদিকে তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষ বলেছেন,’আমরা চাই এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হোক’।

এদিকে গতকালই আনিস খান খুনের ঘটনায় সিট গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সিট গঠিত হয়েছে।   মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে এই সিট গঠন করা হবে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট তলব করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান,  আনিসের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো ছিল। আনিসের মৃত্যুর ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এই ধরনের ঘটনা আমাদের কাম্য নয়। আমি চাই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। আমি এই সব বিষয়ে খুবই কড়া। আমিও যদি দোষী হই, আমাকেও জেনেও ছেড়ে কথা বলা না হয়। আমি কারুর জীবন ফিরিয়ে দিতে পারব না। কিন্তু আমার হাতে যে টা আছে, আমি সেটা করতে পারব।

ইতিমধ্যেই আনিস খান হত্যা মামলায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করেছে হাইকোর্ট। ছাত্রনেতার খুনের প্রকৃত কারণ জানতে ঘটনার সত্যা-সত্য প্রকাশ্যে আনতে স্বতঃপ্রণোদিত মামলার আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আইনজীবী কৌস্তুভ বাগচি।

এই অবস্থার মধ্যে আনিসের ঘর থেকে পাওয়া গেছে তার মোবাইল। তবে পুলিশের কাছে এই মোবাইল দিতে নারাজ আনিসে পরিবার।

আনিসের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘এই মোবাইল তারা পুলিশকে দেবেন না। পরিবারের বক্তব্য,  আনিসকে পুলিশ খুন করেছে, পুলিশকে কেন মোবাইল দেব? আদালত চাইলে মোবাইল সেখানে জমা দেব। আনিস খানের বাড়ির সামনেই সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়। বাড়িতেও পুলিশে পাহাড়া বসেছে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

আনিস কাণ্ডে নয়া মোড়, সাসপেন্ড আমতা থানার এএসআই সহ ২ পুলিশকর্মী

আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২২, মঙ্গলবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ যতই দিন যাচ্ছে ততই আমতার আনিস খান হত্যারহস্যের জট আরও ঘোরালো হচ্ছে। এদিকে আজ ভবানীভবনে তলব করা হয়েছে, আমতা থানার ওসি ও সেকেন্ড অফিসারকে।

ছাত্র নেতা খুনে আমতা থানার তিন পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হল। সাসপেন্ড হওয়া ৩ পুলিশকর্মীর নাম হোমগার্ড কাশীনাথ বেরা,  এএসআই নির্মল দাস ও কনস্টেবল জিতেন্দ্র হেমব্রম। এই তিনজনই ঘটনার দিন আরটি ভ্যানের দায়িত্বে ছিলেন। কর্তব্যে গাফিলতি ও নিহতের পরিবারের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারের জন্য এই সাসপেন্ড বলে জানা গেছে।

 

তবে রাজ্যের এই পদক্ষেপে সন্তুষ্ট নয়  আনিসের পরিবার। তাদের পরিবারে পক্ষ থেকে নিহত ছাত্র নেতার বাবা জানিয়েছেন, আজ যাদের সাসপেন্ড করা হল তাদের অন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হবে। আমি চাই এই ঘটনার সিবিআই তদন্ত হোক।

আনিসের  বাবাকে সাংবাদিকরা জিজ্ঞাসা করেন, ‘তিনি কি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যাবেন? প্রশ্নের উত্তরে আনিসের বাবা জানান, আমার ছেলে খুন হয়েছে, আমি কেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যাব?

মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আনিসের যোগাযোগ থাকার বক্তব্যও উড়িয়ে দেন তিনি।

 

এদিকে গতকালই ক্যাবিনেট বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, আনিসের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল। এদিকে আজ সেই কথাই উড়িয়ে দিলেন নিহত ছাত্র নেতার বাবা।

 

সাসপেন্ডের ঘটনায় বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, ‘কোনও ঘটনার এত তাড়াতাড়ি তদন্ত হয় না। তদন্ত না করেই তিন পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড করে দেওয়া হল।’

অন্যদিকে তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষ বলেছেন,’আমরা চাই এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হোক’।

এদিকে গতকালই আনিস খান খুনের ঘটনায় সিট গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সিট গঠিত হয়েছে।   মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে এই সিট গঠন করা হবে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট তলব করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান,  আনিসের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো ছিল। আনিসের মৃত্যুর ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এই ধরনের ঘটনা আমাদের কাম্য নয়। আমি চাই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। আমি এই সব বিষয়ে খুবই কড়া। আমিও যদি দোষী হই, আমাকেও জেনেও ছেড়ে কথা বলা না হয়। আমি কারুর জীবন ফিরিয়ে দিতে পারব না। কিন্তু আমার হাতে যে টা আছে, আমি সেটা করতে পারব।

ইতিমধ্যেই আনিস খান হত্যা মামলায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করেছে হাইকোর্ট। ছাত্রনেতার খুনের প্রকৃত কারণ জানতে ঘটনার সত্যা-সত্য প্রকাশ্যে আনতে স্বতঃপ্রণোদিত মামলার আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আইনজীবী কৌস্তুভ বাগচি।

এই অবস্থার মধ্যে আনিসের ঘর থেকে পাওয়া গেছে তার মোবাইল। তবে পুলিশের কাছে এই মোবাইল দিতে নারাজ আনিসে পরিবার।

আনিসের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘এই মোবাইল তারা পুলিশকে দেবেন না। পরিবারের বক্তব্য,  আনিসকে পুলিশ খুন করেছে, পুলিশকে কেন মোবাইল দেব? আদালত চাইলে মোবাইল সেখানে জমা দেব। আনিস খানের বাড়ির সামনেই সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়। বাড়িতেও পুলিশে পাহাড়া বসেছে।