১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অবশেষে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যার কথা স্বীকার করল আমেরিকা

মাসুদ আলি
  • আপডেট : ২১ মার্চ ২০২২, সোমবার
  • / 6

 পুবের কলম ওয়েবডেস্ক :  মায়ানমারে সামরিক বাহিনী সেদেশের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর ওপর যে নিপীড়ন চালিয়েছে, তাকে প্রথমবারের মত ‘জোনোসাইড’ হিসেবে বর্ণনা করল যুক্তরাষ্ট্রের জো বাইডেন প্রশাসন। মায়ানমারের সংখ্যালঘু মুসলিমদের হত্যা এবং দেশ থেকে বিতাড়িত করার পর থেকেই মানবাধিকার সংগঠনগুলো দাবি করছিল যে মায়ানমারে গণহত্যা হয়েছে। এই গণহত্যার স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে আসছিল তারা। এতদিনে যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের ‘প্রমাণ পেয়েছে’ ওয়াশিংটন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন সোমবার ওয়াশিংটন ডিসির ইউএস হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে এক অনুষ্ঠানে মায়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের এই আনুষ্ঠানিক অবস্থানের কথা ঘোষণা করবেন। ‘বার্মা’স পাথ টু জেনোসাইড’ নামে একটি প্রদর্শনী প্রদর্শন করার কথাও রয়েছে সেখানে । রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার বিষয়ে বাইডেন প্রশাসন যে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে সে খবর প্রথম প্রকাশ করে রয়টার্স।

২০১৭ সালে মিয়ানমারের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গার বিরুদ্ধে সংঘটিত নির্বিচার হত্যাকাণ্ড ও ধর্ষণের অভিযোগকে এতদিন পর্যন্ত ‘গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করেনি আমেরিকা । এই সহিংস ঘটনার ফলে প্রায় ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। ফলে দেশটির শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনার সুপারিশ করে জাতিসংঘ।

রবিবার এক বিবৃতিতে ডেমোক্র্যাটিক দলের সিনেটর ও সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটির সদস্য জেফ মার্কলে বলেন, ‘অবশেষে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সহিংস ঘটনাগুলোকে গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করায় আমি বাইডেন প্রশাসনকে সাধুবাদ জানাই। যদিও এ ঘোষণা আরও অনেক আগেই আসা উচিৎ ছিল, তবুও এটি এ অত্যাচারী শাসকগোষ্ঠীকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার পথে একটি শক্তিশালী ও গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।’ তিনি আরও জানান, ‘এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে নেতৃত্বের ভার নিতে হবে এবং সারা বিশ্বের কাছে এ বিষয়টি পরিষ্কার করতে হবে যে, এ ধরনের নৃশংসতার ঘটনা পৃথিবীর যেখানেই ঘটুক না কেনো, কখনোই তা ধামাচাপা দেওয়া যাবে না।’

২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, মায়ানমারের উত্তরের রাখাইন রাজ্যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সেখানকার জনগোষ্ঠীর মধ্যে ত্রাস সৃষ্টি করা হয়েছে এবং নিজেদের মাটি থেকে রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে৷ মানবাধিক লঙ্ঘনের ঘটনায় জড়িত হিসেবে মায়ানমারের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা মিন অং হ্লা্য়িংসহ কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র৷

 

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

অবশেষে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যার কথা স্বীকার করল আমেরিকা

আপডেট : ২১ মার্চ ২০২২, সোমবার

 পুবের কলম ওয়েবডেস্ক :  মায়ানমারে সামরিক বাহিনী সেদেশের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর ওপর যে নিপীড়ন চালিয়েছে, তাকে প্রথমবারের মত ‘জোনোসাইড’ হিসেবে বর্ণনা করল যুক্তরাষ্ট্রের জো বাইডেন প্রশাসন। মায়ানমারের সংখ্যালঘু মুসলিমদের হত্যা এবং দেশ থেকে বিতাড়িত করার পর থেকেই মানবাধিকার সংগঠনগুলো দাবি করছিল যে মায়ানমারে গণহত্যা হয়েছে। এই গণহত্যার স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে আসছিল তারা। এতদিনে যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের ‘প্রমাণ পেয়েছে’ ওয়াশিংটন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন সোমবার ওয়াশিংটন ডিসির ইউএস হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে এক অনুষ্ঠানে মায়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের এই আনুষ্ঠানিক অবস্থানের কথা ঘোষণা করবেন। ‘বার্মা’স পাথ টু জেনোসাইড’ নামে একটি প্রদর্শনী প্রদর্শন করার কথাও রয়েছে সেখানে । রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার বিষয়ে বাইডেন প্রশাসন যে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে সে খবর প্রথম প্রকাশ করে রয়টার্স।

২০১৭ সালে মিয়ানমারের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গার বিরুদ্ধে সংঘটিত নির্বিচার হত্যাকাণ্ড ও ধর্ষণের অভিযোগকে এতদিন পর্যন্ত ‘গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করেনি আমেরিকা । এই সহিংস ঘটনার ফলে প্রায় ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। ফলে দেশটির শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনার সুপারিশ করে জাতিসংঘ।

রবিবার এক বিবৃতিতে ডেমোক্র্যাটিক দলের সিনেটর ও সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটির সদস্য জেফ মার্কলে বলেন, ‘অবশেষে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সহিংস ঘটনাগুলোকে গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করায় আমি বাইডেন প্রশাসনকে সাধুবাদ জানাই। যদিও এ ঘোষণা আরও অনেক আগেই আসা উচিৎ ছিল, তবুও এটি এ অত্যাচারী শাসকগোষ্ঠীকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার পথে একটি শক্তিশালী ও গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।’ তিনি আরও জানান, ‘এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে নেতৃত্বের ভার নিতে হবে এবং সারা বিশ্বের কাছে এ বিষয়টি পরিষ্কার করতে হবে যে, এ ধরনের নৃশংসতার ঘটনা পৃথিবীর যেখানেই ঘটুক না কেনো, কখনোই তা ধামাচাপা দেওয়া যাবে না।’

২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, মায়ানমারের উত্তরের রাখাইন রাজ্যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সেখানকার জনগোষ্ঠীর মধ্যে ত্রাস সৃষ্টি করা হয়েছে এবং নিজেদের মাটি থেকে রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে৷ মানবাধিক লঙ্ঘনের ঘটনায় জড়িত হিসেবে মায়ানমারের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা মিন অং হ্লা্য়িংসহ কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র৷