১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কৃত্রিম সংখ্যাগুরুবাদ তৈরিতে হিংসাই হাতিয়ার হিন্দুত্ববাদের : অরুন্ধতী রায়

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২২, শুক্রবার
  • / 15

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: দেশে বর্ণ ও শ্রেণিবৈষম্য, সাম্প্রদায়িক হিংসা ও অসহিষ্ণুতার কথা তুলে ধরে বুকার প্রাইজজয়ী লেখিকা ও সমাজকর্মী অরুন্ধতী রায় বলেছেন, সামাজিক সংকট থেকেই ফ্যাসিবাদ শুরু হয়।

বর্তমান সামাজিক স্তরবিন্যাসের ক্ষেত্রে এই ফ্যাসিবাদ এখন এক মূর্তিমান বিপদ হিসেবে দেখা দিয়েছে। মানবাধিকার কর্মী কে বালাগোপালের তেরোতম স্মরণসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে রবিবার এমন মন্তব্য করেছেন অরুন্ধতী।

এই ভাষণের শিরোনাম ছিল ‘হিন্দুত্ব : অনগোয়িং ডেসিমেশন অফ কনস্টিটিউশনাল ভ্যালুজ অ্যান্ড দ্য নিড টু রেস্টোর আওয়ার ডেমোক্রেসি’। ‘ফ্যাসিবাদী আন্দোলন’ নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি কোভিড-১৯জনিত লকডাউনের ফলাফলকে তুলে ধরেন।

এই অপরিকল্পিত লকডাউনের ফলে পরিযায়ী শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে পড়তে বাধ্য হন। এর পাশাপাশি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ইসলামাতঙ্ক, পুঁজিবাদ ও অন্যান্য বিষয়েও তিনি বক্তব্য রাখেন এদিন। পরমাণু যুদ্ধের সম্ভাবনা ব্যাপক হারে বাড়ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশও করেছেন অরুন্ধতী।

তাঁর কথায়, ‘‘ভারতে রয়েছে অসংখ্য ভাষা, উপভাষা, ধর্ম, এথিনিসিটি, জাতি, বর্ণ। আমরা সংখ্যালঘুদের দেশ। এই দেশে কোনও সংখ্যাগুরু নেই। কৃত্রিম সংখ্যাগুরুবাদ তৈরির জন্য হিন্দুত্বের হিংসা, এর কোনও অস্তিত্ব নেই।

কিন্তু রাজনৈতিক স্বার্থে হিন্দুত্ববাদের ধারণা প্রচার করতে কিছু মানুষ উঠেপড়ে লেগেছে। এটা উদ্বেগের বিষয়।’’ হিন্দুত্ববাদী অর্থনৈতিক মৌলবাদ নিয়েও তিনি আলোচনা করেছেন। মোদির আমলে এই মৌলবাদ কীভাবে রাজ করছে তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেন।

তিনি বলেন, ‘‘মোদি যে বিমানে করে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে যান, সেই বিমানে জ্বলজ্বল করছিল আদানির নাম। আট বছর পর, আদানি হয়ে উঠলেন বিশ্বের দ্বিতীয় বিত্তশালী মানুষ। নোটবন্দি ও লকডাউন দেশের রাজনৈতিক দলগুলিকে দেউলিয়া করে দিয়েছে।

এখন নির্বাচন হয়ে দাঁড়িয়েছে বিএমডব্লিউ ও গরুর গাড়ির লড়াই। কিন্তু মনে রাখবেন, গরুর গাড়ি ও সাইকেল এমন জায়গায় যেতে পারে, বিএমডব্লিউ সেখানে যেতে পারে না। এটাই আমাদের আশা।’’ অল ইন্ডিয়া সেন্ট্রাল কাউন্সিল অফ ট্রেড ইউনিয়নের (এআইসিসিটিইউ) ক্লিফটন ডি রোজারিও ‘শ্রমজীবী শ্রেণির উপর ফ্যাসিবাদী আক্রমণে’র বিষয়ে বক্তব্য রাখেন এই সভায়।

তিনি সরকারি কিছু নীতির উপর আলোকপাত করেন। ক্লিফটন বলেন,‘‘সমুদ্র সৈকতে খনি ব্যবসায় আদানি গোষ্ঠী ঢোকার কয়েক দিন পরেই, কেন্দ্র সরকার সমুদ্র সৈকতে খনিজ সম্পদ উত্তোলনের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। তাদের মধ্যে এমনই মিত্রতা।’’

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

কৃত্রিম সংখ্যাগুরুবাদ তৈরিতে হিংসাই হাতিয়ার হিন্দুত্ববাদের : অরুন্ধতী রায়

আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২২, শুক্রবার

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: দেশে বর্ণ ও শ্রেণিবৈষম্য, সাম্প্রদায়িক হিংসা ও অসহিষ্ণুতার কথা তুলে ধরে বুকার প্রাইজজয়ী লেখিকা ও সমাজকর্মী অরুন্ধতী রায় বলেছেন, সামাজিক সংকট থেকেই ফ্যাসিবাদ শুরু হয়।

বর্তমান সামাজিক স্তরবিন্যাসের ক্ষেত্রে এই ফ্যাসিবাদ এখন এক মূর্তিমান বিপদ হিসেবে দেখা দিয়েছে। মানবাধিকার কর্মী কে বালাগোপালের তেরোতম স্মরণসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে রবিবার এমন মন্তব্য করেছেন অরুন্ধতী।

এই ভাষণের শিরোনাম ছিল ‘হিন্দুত্ব : অনগোয়িং ডেসিমেশন অফ কনস্টিটিউশনাল ভ্যালুজ অ্যান্ড দ্য নিড টু রেস্টোর আওয়ার ডেমোক্রেসি’। ‘ফ্যাসিবাদী আন্দোলন’ নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি কোভিড-১৯জনিত লকডাউনের ফলাফলকে তুলে ধরেন।

এই অপরিকল্পিত লকডাউনের ফলে পরিযায়ী শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে পড়তে বাধ্য হন। এর পাশাপাশি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ইসলামাতঙ্ক, পুঁজিবাদ ও অন্যান্য বিষয়েও তিনি বক্তব্য রাখেন এদিন। পরমাণু যুদ্ধের সম্ভাবনা ব্যাপক হারে বাড়ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশও করেছেন অরুন্ধতী।

তাঁর কথায়, ‘‘ভারতে রয়েছে অসংখ্য ভাষা, উপভাষা, ধর্ম, এথিনিসিটি, জাতি, বর্ণ। আমরা সংখ্যালঘুদের দেশ। এই দেশে কোনও সংখ্যাগুরু নেই। কৃত্রিম সংখ্যাগুরুবাদ তৈরির জন্য হিন্দুত্বের হিংসা, এর কোনও অস্তিত্ব নেই।

কিন্তু রাজনৈতিক স্বার্থে হিন্দুত্ববাদের ধারণা প্রচার করতে কিছু মানুষ উঠেপড়ে লেগেছে। এটা উদ্বেগের বিষয়।’’ হিন্দুত্ববাদী অর্থনৈতিক মৌলবাদ নিয়েও তিনি আলোচনা করেছেন। মোদির আমলে এই মৌলবাদ কীভাবে রাজ করছে তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেন।

তিনি বলেন, ‘‘মোদি যে বিমানে করে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে যান, সেই বিমানে জ্বলজ্বল করছিল আদানির নাম। আট বছর পর, আদানি হয়ে উঠলেন বিশ্বের দ্বিতীয় বিত্তশালী মানুষ। নোটবন্দি ও লকডাউন দেশের রাজনৈতিক দলগুলিকে দেউলিয়া করে দিয়েছে।

এখন নির্বাচন হয়ে দাঁড়িয়েছে বিএমডব্লিউ ও গরুর গাড়ির লড়াই। কিন্তু মনে রাখবেন, গরুর গাড়ি ও সাইকেল এমন জায়গায় যেতে পারে, বিএমডব্লিউ সেখানে যেতে পারে না। এটাই আমাদের আশা।’’ অল ইন্ডিয়া সেন্ট্রাল কাউন্সিল অফ ট্রেড ইউনিয়নের (এআইসিসিটিইউ) ক্লিফটন ডি রোজারিও ‘শ্রমজীবী শ্রেণির উপর ফ্যাসিবাদী আক্রমণে’র বিষয়ে বক্তব্য রাখেন এই সভায়।

তিনি সরকারি কিছু নীতির উপর আলোকপাত করেন। ক্লিফটন বলেন,‘‘সমুদ্র সৈকতে খনি ব্যবসায় আদানি গোষ্ঠী ঢোকার কয়েক দিন পরেই, কেন্দ্র সরকার সমুদ্র সৈকতে খনিজ সম্পদ উত্তোলনের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। তাদের মধ্যে এমনই মিত্রতা।’’