পঁচাত্তরের বিশ্বভারতীর সঙ্গীত ভবনের ছাত্রীর পদ্মশ্রী প্রাপ্তিতে উচ্ছ্বসিত বিশ্বভারতী

- আপডেট : ২৬ জানুয়ারী ২০২৪, শুক্রবার
- / 43
দেবশ্রী মজুমদার, শান্তিনিকেতন : জীবন ও সঙ্গীত যেখানে মিলেমিশে একাকার সেই বিশ্বভারতীর সঙ্গীত ভবনের উনিশ শো পঁচাত্তর সালের ছাত্রী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা এবার পদ্মশ্রী প্রাপকের তালিকায়। স্বাভাবিক ভাবেই বিশ্বভারতী এই আনন্দের শরিক। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার এই অনন্য সম্মানে আনন্দ প্রকাশ করেছে বিশ্বভারতী।
বিশ্বভারতীর জন সংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, খুবই আনন্দের খবর। উনি আমাদের মোহরদির খুবই স্নেহধন্যা ছিলেন। আমরা সবাই গর্বিত। সঙ্গীত ভবনের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায় ছিলেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার সহপাঠী। একসঙ্গে দুজনেই সঙ্গীত ভবনে সঙ্গীত চর্চা করেন। বেশ কিছুটা সময় এক সঙ্গে কাটিয়েছেন। পরেও অনেকবার শান্তিনিকেতনে বিভিন্ন সময় এসেছেন বন্যা। শান্তিনিকেতনের সঙ্গে বিশেষ করে রবীন্দ্র সঙ্গীতের সঙ্গে তাঁর নাড়ির টান।
সঙ্গীত ভবনের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায় বলেন, “রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা বিশ্বভারতীতে এসেছিলেন। আমরা সহপাঠী ছিলাম। সে সময় থেকে ছয় বছর শান্তিনিকেতনে ছিলেন তিনি। পঁচাত্তর থেকে একাশি পর্যন্ত সঙ্গীত ভবনে রবীন্দ্র সঙ্গীত নিয়ে পড়শোনা করেছেন। খুবই কৃতী ছাত্রী। মোহরদির স্নেহধন্যা কৃতী ছাত্রী ছিলেন। শুধু মোহরদি না, নিলীমা সে , বাচ্চুদি, গোরাদা, অশেষ বন্দ্যোপাধ্যায়, মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায় সকলের স্নেহধন্যা ছিলেন। এখন তো তাঁর সুনাম জগৎজোড়া। তাঁর পদ্মশ্রী প্রাপ্তিতে আমরা গর্বিত। খুবই আনন্দের খবর। খুবই খুশির খবর। তিনি কাজের মধ্যে রয়েছেন। অনুষ্ঠান করছেন। তাঁর নিজস্ব প্রতিষ্ঠান “সুরের ধারা” আছে। আমরা একসঙ্গে পড়াশোনা করেছি। আমার খুব ভালো লাগছে। আমার সহপাঠী ছিলেন তিনি। সে সময় সঙ্গীত ভবন নক্ষত্র খচিত ছিল। আরেকজনের নাম মনে পড়ছে। তিনিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন। তিনি হলেন সামিমা পারভিন। সেদিনগুলো ছিল অসাধারণ। সে সময় আমাদের প্রত্যেকের সঙ্গে ছিল সুন্দর সম্পর্ক। শিক্ষক শিক্ষিকার সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের একটা সুন্দর সম্পর্ক ছিল। আমরা তাঁদের এতো স্নেহ পেয়েছি। তাদের এতো কাছের ছিলাম, তাঁরা বুঝতেই দেন নি যে তাঁরা কত বড়ো মাপের মানুষ।”
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার কাছে শান্তিনিকেতন ছিল স্বপ্নের জায়গা। তিনি ম্যাট্রিক পাশ করেন ৭২-এ, ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন ৭৫-এ। এর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি অনার্স নিয়ে ভর্তি হন। তিন-চার মাস ক্লাস করার পর আইসিসিআর স্কলারশিপ পান। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোর্স করার জন্য সেটি দেওয়া হয়। তাতে শান্তিনিকেতন আসা আরও সহজ হয়ে যায়। কনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খুব কাছের মানুষ ছিলেন বন্যা। আগে পশ্চিম বঙ্গ সরকার তাঁকে বঙ্গভূষণ সম্মানে ভূষিত করেছে।