১৬ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৬ এপ্রিল নেতাজি ইন্ডোরে মুখ্যমন্ত্রী বার্তা সারা দেশকে দিশা দেবে

Waqf Law: ইমাম-মুয়াজ্জিন ও বুদ্ধিজীবীদের সাংবাদিক সম্মেলন

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৪ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার
  • / 72

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: আগামী ১৬ এপ্রিল নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্যের ইমাম-মুয়াজ্জিন এবং বুদ্ধিজীবীদের আমন্ত্রণে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। থাকবেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এই সভায় মুখ্যমন্ত্রী কি বার্তা দেন, সেদিকে তাকিয়ে আছে রাজ্যবাসী। এরই প্রেক্ষিতে সবাই যাতে সমাবেশে যোগদান করেন এমনই আহ্বান জানালেন রাজ্যের ইমাম-মুয়াজ্জিন ও বিশিষ্টরা। তাঁরা রবিবার দুপুরে কলকাতা প্রেস ক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সেই সমাবেশ ও বাংলার শান্তি অক্ষুন্ন রাখার বার্তা দেন আহ্বায়কদের মধ্যে অন্যতম মাওলানা বাকিবিল্লাহ মোল্লা। রাজ্যের সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান আহমদ হাসান ইমরান, নাখোদা মসজিদের ইমাম মাওলানা শফিক কাসেমী, ইমাম-মুয়াজ্জিন সংগঠনের মাওলানা আবদুল্লাহ, মাওলানা নিজামুদ্দিন বিশ্বাস, মিল্লি কাউন্সিলের শাহুদ আলম, সমাজকর্মী ইস্তিয়াক আহমেদ রাজু, মাওলানা সিরাজুল, মাওলানা হামিদ হোসেন কাসেমী, সমাজকর্মী কুতুবুদ্দিন তরফদার প্রমুখ।

সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যের সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান আহমদ হাসান ইমরান বলেন, মোদি সরকার পার্লামেন্টে এক সংশোধনী এনে মুসলিমদের উপর জোর করে ওয়াকফ আইন চাপিয়ে দিয়েছে। নতুন আইনের নাম রাখা হয়েছে ‘উম্মিদ’। এই আইন মুসলিমরা কেউই চাননি। আমাদের দেশে প্রায় হাজার বছর ধরে ওয়াকফ (Waqf Law) আছে। মানুষ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ওয়াকফ করেন। ওয়াকফের মাধ্যমে শিক্ষা, স্বাস্থ্যের কাজ হয়। তিনি আরও বলেন, ওয়াকফ আয় থেকে গরিবদের জন্য কাজ করা হয়, অনেক স্কুল কলেজ চালানো হয়। আপনারা জানেন, হামদর্দ নামে একটি ওষুধ কোম্পানি আছে, সেটাও ওয়াকফের (Waqf Law)। সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ চালানো হয়। আমাদের দেশে বহু  মন্দিরের অনেক সম্পত্তি আছে, যেমন তিরুপতি মন্দির ।  আমরা চাই সেগুলি  হিন্দু ভাইদের হাতেই থাকুক। আমরা সরকারের চাপিয়ে দেওয়া আইন চাই না। আইনের মাধ্যমে মুসলিমদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।

Waqf Law: ইমাম-মুয়াজ্জিন ও বুদ্ধিজীবীদের সাংবাদিক সম্মেলন

তাই মুসলিমদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, তারা প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তবে আন্দোলন যাতে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পথে হয়, সেই  আহ্বান জানান ইমরান। পুলিশকে সংযত আচরণ করার কথাও বলেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টে বিভিন্ন সংগঠন মামলা করেছে, আদালত ইনসাফ দেবে বলেও আশা ব্যক্ত করেন ইমরান। আর মুর্শিদাবাদের ঘটনা নিয়েও  নিন্দা জানান তিনি। এ দিন মাওলানা বাকিবিল্লাহ বলেন, আমরা নয়া ওয়াকফ আইনের (Waqf Law) বিরুদ্ধে। আমরা অবশ্যই এর প্রতিবাদ করব, কিন্তু আমাদের শান্তি ও গণতান্ত্রিক উপায়ে আন্দোলন করতে হবে। একই  আহ্বান জানান মাওলানা শফিক কাসেমী। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ১৬ এপ্রিল শান্তি ও সংহতির বার্তা দেবেন বলে সকলেই আশা করছেন। আমরা চাই সমস্ত জাতি-ধর্মের মানুষ মিলেমিশে থাকুন, কেউ অশান্তি পাকাতে এলে তার বিরুদ্ধে যাতে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় সেই দাবিও থাকবে।

আরও পড়ুন: আজ উদ্বোধন, ভালো ব্যবসার আশায় কালীঘাটের উদ্বাস্তু হকাররা

অন্যদিকে মুর্শিদাবাদের ঘটনা প্রসঙ্গে মাওলানা নিজামুদ্দিন বিশ্বাস উল্লেখ করেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যে কিভাবে মুর্শিদাবাদের ঘটনা ঘটে গিয়েছে তা আমরা নিজেরাই বুঝতে পারছি না। মানুষকে বলব আপনারা সচেতন থাকুন, প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করুন। তিনি সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, বহিরাগত কোনও শক্তি এর পেছনে নিশ্চয়ই ছিল, না হলে এটা হতো না। মাওলানা আবদুল্লাহ দাবি করেন, মুর্শিদাবাদে যে পরিবেশ তৈরি হয়েছে তার পেছনে বিশেষ রাজনৈতিক দলের হাত আছে। তিনি বলেন, প্রকৃত হিন্দু কখনও মসজিদে আঘাত করতে পারে না আর মুসলিমও কখনও মন্দিরে আঘাত করে না। কিছু মানুষ রাজনীতির স্বার্থে উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে উসকানি দিয়ে হানাহানি তৈরি করছে। এছাড়া বাংলা এবং দেশের শান্তি-সম্প্রীতির বজায় রাখার  আর্জি জানান মাওলানা হামিদ হোসেন কাসেমী। সমাজকর্মী ইস্তিয়াক আহমেদ রাজু, শাহুদ আলম, মাওলানা মেহের আব্বাস রিজভী প্রমুখ। সমাজকর্মী কুতুবুদ্দিন তরফদার বলেন, আমাদের দেশে অনেক লম্বা ইতিহাস আছে কোনও নির্যাতনকারী শাসক বেশিদিন টিকে থাকতে পারেন না, ফলে একদিন মোদিকেও মানুষ সরিয়ে দেবে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

১৬ এপ্রিল নেতাজি ইন্ডোরে মুখ্যমন্ত্রী বার্তা সারা দেশকে দিশা দেবে

Waqf Law: ইমাম-মুয়াজ্জিন ও বুদ্ধিজীবীদের সাংবাদিক সম্মেলন

আপডেট : ১৪ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: আগামী ১৬ এপ্রিল নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্যের ইমাম-মুয়াজ্জিন এবং বুদ্ধিজীবীদের আমন্ত্রণে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। থাকবেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এই সভায় মুখ্যমন্ত্রী কি বার্তা দেন, সেদিকে তাকিয়ে আছে রাজ্যবাসী। এরই প্রেক্ষিতে সবাই যাতে সমাবেশে যোগদান করেন এমনই আহ্বান জানালেন রাজ্যের ইমাম-মুয়াজ্জিন ও বিশিষ্টরা। তাঁরা রবিবার দুপুরে কলকাতা প্রেস ক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সেই সমাবেশ ও বাংলার শান্তি অক্ষুন্ন রাখার বার্তা দেন আহ্বায়কদের মধ্যে অন্যতম মাওলানা বাকিবিল্লাহ মোল্লা। রাজ্যের সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান আহমদ হাসান ইমরান, নাখোদা মসজিদের ইমাম মাওলানা শফিক কাসেমী, ইমাম-মুয়াজ্জিন সংগঠনের মাওলানা আবদুল্লাহ, মাওলানা নিজামুদ্দিন বিশ্বাস, মিল্লি কাউন্সিলের শাহুদ আলম, সমাজকর্মী ইস্তিয়াক আহমেদ রাজু, মাওলানা সিরাজুল, মাওলানা হামিদ হোসেন কাসেমী, সমাজকর্মী কুতুবুদ্দিন তরফদার প্রমুখ।

সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যের সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান আহমদ হাসান ইমরান বলেন, মোদি সরকার পার্লামেন্টে এক সংশোধনী এনে মুসলিমদের উপর জোর করে ওয়াকফ আইন চাপিয়ে দিয়েছে। নতুন আইনের নাম রাখা হয়েছে ‘উম্মিদ’। এই আইন মুসলিমরা কেউই চাননি। আমাদের দেশে প্রায় হাজার বছর ধরে ওয়াকফ (Waqf Law) আছে। মানুষ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ওয়াকফ করেন। ওয়াকফের মাধ্যমে শিক্ষা, স্বাস্থ্যের কাজ হয়। তিনি আরও বলেন, ওয়াকফ আয় থেকে গরিবদের জন্য কাজ করা হয়, অনেক স্কুল কলেজ চালানো হয়। আপনারা জানেন, হামদর্দ নামে একটি ওষুধ কোম্পানি আছে, সেটাও ওয়াকফের (Waqf Law)। সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ চালানো হয়। আমাদের দেশে বহু  মন্দিরের অনেক সম্পত্তি আছে, যেমন তিরুপতি মন্দির ।  আমরা চাই সেগুলি  হিন্দু ভাইদের হাতেই থাকুক। আমরা সরকারের চাপিয়ে দেওয়া আইন চাই না। আইনের মাধ্যমে মুসলিমদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।

Waqf Law: ইমাম-মুয়াজ্জিন ও বুদ্ধিজীবীদের সাংবাদিক সম্মেলন

তাই মুসলিমদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, তারা প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তবে আন্দোলন যাতে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পথে হয়, সেই  আহ্বান জানান ইমরান। পুলিশকে সংযত আচরণ করার কথাও বলেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টে বিভিন্ন সংগঠন মামলা করেছে, আদালত ইনসাফ দেবে বলেও আশা ব্যক্ত করেন ইমরান। আর মুর্শিদাবাদের ঘটনা নিয়েও  নিন্দা জানান তিনি। এ দিন মাওলানা বাকিবিল্লাহ বলেন, আমরা নয়া ওয়াকফ আইনের (Waqf Law) বিরুদ্ধে। আমরা অবশ্যই এর প্রতিবাদ করব, কিন্তু আমাদের শান্তি ও গণতান্ত্রিক উপায়ে আন্দোলন করতে হবে। একই  আহ্বান জানান মাওলানা শফিক কাসেমী। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ১৬ এপ্রিল শান্তি ও সংহতির বার্তা দেবেন বলে সকলেই আশা করছেন। আমরা চাই সমস্ত জাতি-ধর্মের মানুষ মিলেমিশে থাকুন, কেউ অশান্তি পাকাতে এলে তার বিরুদ্ধে যাতে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় সেই দাবিও থাকবে।

আরও পড়ুন: আজ উদ্বোধন, ভালো ব্যবসার আশায় কালীঘাটের উদ্বাস্তু হকাররা

অন্যদিকে মুর্শিদাবাদের ঘটনা প্রসঙ্গে মাওলানা নিজামুদ্দিন বিশ্বাস উল্লেখ করেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যে কিভাবে মুর্শিদাবাদের ঘটনা ঘটে গিয়েছে তা আমরা নিজেরাই বুঝতে পারছি না। মানুষকে বলব আপনারা সচেতন থাকুন, প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করুন। তিনি সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, বহিরাগত কোনও শক্তি এর পেছনে নিশ্চয়ই ছিল, না হলে এটা হতো না। মাওলানা আবদুল্লাহ দাবি করেন, মুর্শিদাবাদে যে পরিবেশ তৈরি হয়েছে তার পেছনে বিশেষ রাজনৈতিক দলের হাত আছে। তিনি বলেন, প্রকৃত হিন্দু কখনও মসজিদে আঘাত করতে পারে না আর মুসলিমও কখনও মন্দিরে আঘাত করে না। কিছু মানুষ রাজনীতির স্বার্থে উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে উসকানি দিয়ে হানাহানি তৈরি করছে। এছাড়া বাংলা এবং দেশের শান্তি-সম্প্রীতির বজায় রাখার  আর্জি জানান মাওলানা হামিদ হোসেন কাসেমী। সমাজকর্মী ইস্তিয়াক আহমেদ রাজু, শাহুদ আলম, মাওলানা মেহের আব্বাস রিজভী প্রমুখ। সমাজকর্মী কুতুবুদ্দিন তরফদার বলেন, আমাদের দেশে অনেক লম্বা ইতিহাস আছে কোনও নির্যাতনকারী শাসক বেশিদিন টিকে থাকতে পারেন না, ফলে একদিন মোদিকেও মানুষ সরিয়ে দেবে।