১৮ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার, ৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উত্তরপ্রদেশে ৫৪ জনের প্রাণহানির কারণ কি তীব্র দাহদাহ! মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১৯ জুন ২০২৩, সোমবার
  • / 22

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:  তীব্র দাবদহের জেরে উত্তরপ্রদেশে ৫৪ জনের মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছে। কিন্তু এই পরিসংখ্যান প্রকাশের পরেই মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। লখনউয়ের চিকিৎসকের নেতৃত্বাধীন কমিটি জানিয়েছে,  হয়তো জলের সমস্যার কারণেই এতগুলি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কারণ মৃতদের প্রত্যেকেরই  বুকে ব্যথা ছিল,  যেটা অত্যধিক গরমে হতে পারে না। এছাড়াও মৃত্যুর কারণ  প্রসঙ্গে ভুল তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে এক আধিকারিককে বরখাস্ত করেছে উত্তরপ্রদেশের স্বাস্থ্য দফতর। রবিবার জানা যায়, গত তিনদিনে উত্তরপ্রদেশে বালিয়ায় মৃত্যু হয়েছে ৫৪ জনের। যার মধ্যে সরকারি হিসেবে ৪৪ জনের মৃ্ত্যুর খবর দেওয়া হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, সকলেই মারা গিয়েছেন তাপপ্রবাহের কারণে। যোগীরাজ্যের বালিয়া জেলার এক হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছেন ৪০০-র বেশি। যাঁরা প্রত্যেকেই তাপপ্রবাহের ফলে  অসুস্থ হয়েছেন বলেই জানা গিয়েছে। অধিকাংশই বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভরতি হয়েছেন।

এই পরিসংখ্যান প্রকাশ্যে আসার পরেই বরখাস্ত করা হয় বালিয়ার চিফ মেডিক্যাল সুপারিনটেন্ডেন্ট পদের এক চিকিৎসককে। তিনিই জানিয়েছিলেন অতিরিক্ত গরমের কারণেই এতজন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই মন্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হতেই ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করে উত্তরপ্রদেশ সরকার।

রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক জানান,  ‘তাপপ্রবাহে মৃত্যু সম্পর্কে সঠিক তথ্য ছাড়াই মন্তব্য করেছেন ওই আধিকারিক। তাই তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। একসঙ্গে এতজনের মৃত্যুর খবরে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধীরা।

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব বলেন,  গত ছয় বছরে একটাও হাসপাতাল তৈরি করেনি সরকার, চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু হয়েছে দরিদ্র কৃষকদের। এহেন  অভিযোগের পরেই তড়িঘড়ি তদন্ত কমিটি গঠন করে যোগী সরকার।

রবিবারেই সেই কমিটির এক সদস্য জানিয়েছেন, “প্রথমত, বালিয়ার আশেপাশের এলাকাগুলিতেও গরম পড়েছে কিন্তু এত মানুষের মৃত্যু হয়নি। তাই এটা ধরেই নেওয়া যায় যে তাপপ্রবাহটা মূল কারণ নয়। তাছাড়াও মৃতদের প্রত্যেকেরই মূল সমস্যা ছিল বুকে ব্যথা, সেটাও তাপপ্রবাহের জন্য হয় না। সম্ভবত জলের সমস্যার জেরেই প্রাণহানি হতে পারে। সেটাও তদন্ত করে দেখা হবে।

গতকালই লখনউ থেকে আসা বিশেষ তদন্তকারি কমিটির তরফে জানানো হয়,  তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। তবে অতিরিক্ত গরমের জন্য মৃত্যু, এটা কারণ হতে পারে না।

তদন্তকারি কমিটির সদস্য তথা প্রবীণ সরকারি চিকিৎসক একে সিং বলেন,  ‘প্রাথমিকভাবে তাপপ্রবাহের কারণে এত সংখ্যক মৃত্যু হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। কারণ পাশের জেলাগুলিতেও তাপপ্রবাহ বইছে, সেখানে তো হঠাৎ করে মৃত্যুহার বেড়ে যায়নি। যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের অধিকাংশেরই প্রাথমিক উপসর্গ ছিল  বুকে ব্যাথা। তাপপ্রবাহে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে এমন উপসর্গ দেখা যায় না।”

 


                            

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

উত্তরপ্রদেশে ৫৪ জনের প্রাণহানির কারণ কি তীব্র দাহদাহ! মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা

আপডেট : ১৯ জুন ২০২৩, সোমবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:  তীব্র দাবদহের জেরে উত্তরপ্রদেশে ৫৪ জনের মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছে। কিন্তু এই পরিসংখ্যান প্রকাশের পরেই মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। লখনউয়ের চিকিৎসকের নেতৃত্বাধীন কমিটি জানিয়েছে,  হয়তো জলের সমস্যার কারণেই এতগুলি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কারণ মৃতদের প্রত্যেকেরই  বুকে ব্যথা ছিল,  যেটা অত্যধিক গরমে হতে পারে না। এছাড়াও মৃত্যুর কারণ  প্রসঙ্গে ভুল তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে এক আধিকারিককে বরখাস্ত করেছে উত্তরপ্রদেশের স্বাস্থ্য দফতর। রবিবার জানা যায়, গত তিনদিনে উত্তরপ্রদেশে বালিয়ায় মৃত্যু হয়েছে ৫৪ জনের। যার মধ্যে সরকারি হিসেবে ৪৪ জনের মৃ্ত্যুর খবর দেওয়া হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, সকলেই মারা গিয়েছেন তাপপ্রবাহের কারণে। যোগীরাজ্যের বালিয়া জেলার এক হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছেন ৪০০-র বেশি। যাঁরা প্রত্যেকেই তাপপ্রবাহের ফলে  অসুস্থ হয়েছেন বলেই জানা গিয়েছে। অধিকাংশই বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভরতি হয়েছেন।

এই পরিসংখ্যান প্রকাশ্যে আসার পরেই বরখাস্ত করা হয় বালিয়ার চিফ মেডিক্যাল সুপারিনটেন্ডেন্ট পদের এক চিকিৎসককে। তিনিই জানিয়েছিলেন অতিরিক্ত গরমের কারণেই এতজন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই মন্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হতেই ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করে উত্তরপ্রদেশ সরকার।

রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক জানান,  ‘তাপপ্রবাহে মৃত্যু সম্পর্কে সঠিক তথ্য ছাড়াই মন্তব্য করেছেন ওই আধিকারিক। তাই তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। একসঙ্গে এতজনের মৃত্যুর খবরে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধীরা।

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব বলেন,  গত ছয় বছরে একটাও হাসপাতাল তৈরি করেনি সরকার, চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু হয়েছে দরিদ্র কৃষকদের। এহেন  অভিযোগের পরেই তড়িঘড়ি তদন্ত কমিটি গঠন করে যোগী সরকার।

রবিবারেই সেই কমিটির এক সদস্য জানিয়েছেন, “প্রথমত, বালিয়ার আশেপাশের এলাকাগুলিতেও গরম পড়েছে কিন্তু এত মানুষের মৃত্যু হয়নি। তাই এটা ধরেই নেওয়া যায় যে তাপপ্রবাহটা মূল কারণ নয়। তাছাড়াও মৃতদের প্রত্যেকেরই মূল সমস্যা ছিল বুকে ব্যথা, সেটাও তাপপ্রবাহের জন্য হয় না। সম্ভবত জলের সমস্যার জেরেই প্রাণহানি হতে পারে। সেটাও তদন্ত করে দেখা হবে।

গতকালই লখনউ থেকে আসা বিশেষ তদন্তকারি কমিটির তরফে জানানো হয়,  তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। তবে অতিরিক্ত গরমের জন্য মৃত্যু, এটা কারণ হতে পারে না।

তদন্তকারি কমিটির সদস্য তথা প্রবীণ সরকারি চিকিৎসক একে সিং বলেন,  ‘প্রাথমিকভাবে তাপপ্রবাহের কারণে এত সংখ্যক মৃত্যু হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। কারণ পাশের জেলাগুলিতেও তাপপ্রবাহ বইছে, সেখানে তো হঠাৎ করে মৃত্যুহার বেড়ে যায়নি। যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের অধিকাংশেরই প্রাথমিক উপসর্গ ছিল  বুকে ব্যাথা। তাপপ্রবাহে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে এমন উপসর্গ দেখা যায় না।”