Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the login-customizer domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u419551674/domains/puberkalom.in/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
অমুসলিম প্রতিবেশী অসুস্থ হলে কী করব? | Puber Kalom
১৭ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অমুসলিম প্রতিবেশী অসুস্থ হলে কী করব?

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, বৃহস্পতিবার
  • / 10

পুবের কলম, দ্বীন দুনিয়া ওয়েবডেস্ক: মানুষ সামাজিক জীব। সমাজবদ্ধ জীবনে সব ধর্ম বর্ণ ও গোত্রের মানুষই এক সঙ্গে বসবাস করে। তাই কোনও মুসলিম ব্যক্তির প্রতিবেশী যদি অমুসলিম হয়, তার অধিকারের প্রতিও খেয়াল রাখা জরুরি। এটিও প্রতিবেশীর হকের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ্তায়ালার ঘোষণা,  ‘দ্বীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদের নিজেদের দেশ থেকে বের করে দেয়নি তাদের প্রতি মহানুভবতা প্রদর্শন ও ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ্ তোমাদের নিষেধ করেননি। আল্লাহ্ তো ন্যায়পরায়ণদের ভালোবাসেন।’ (সূরা মুমতাহিনা, আয়াতঃ ৮) 

তাই কোনওভাবেই অমুসলিম প্রতিবেশীর অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ বা জুলুম করা যাবে না। আবার কোনও অমুসলিম প্রতিবেশী অসুস্থ হলে তার সেবা করাও ইসলামে নিষেধ নয়। কোনও অমুসলিমের প্রতি জুলুম করার অধিকার বা অনুমতি ইসলাম কাউকেই দেয়নি। হাদিসে এসেছে,  রাসূলুল্লাহ্ সা. কারও ওপর জুলুম করতে নিষেধ করেছেন, যদিও মজলুম অমুসলিম হয়। তিনি (সা.) বলেন,  ‘তোমরা মজলুমের বদদোয়া থেকে বেঁচে থেকো, যদিও সে অবিশ্বাসী হয়। তার মাঝখানে আর আল্লাহর মাঝখানে কোনও পর্দা থাকে না। অর্থাৎ তার বদদোয়াও দ্রুত কবুল হয়ে যায়।’ (মুসনাদে আহমাদ) 

বিভিন্ন সময় এমন অনেক প্রশ্ন শুনতে হয় যে, অমুসলিম প্রতিবেশী যদি অসুস্থ হয়, তবে তাকে দেখতে যাওয়া বা তার সেবা করা যাবে কিনা? হ্যাঁ, অমুসলিম প্রতিবেশী যদি অসুস্থ হয়, তবে তাকে সহযোগিতা করা বা সেবা-যত্ন করায় ইসলামে কোনও বাঁধা নেই। রাসূলুল্লাহ্ সা. অমুসলিম অসুস্থ প্রতিবেশীকে দেখতে গেছেন মর্মে হাদিসেই এর প্রমাণ রয়েছে।

অমুসলিম রোগীকে দেখতে যাওয়াও সুন্নত। রাসূলুল্লাহ্ সা. অমুসলিম রোগীদের দেখতে যেতেন এবং তাদের ঈমানের দাওয়াত দিতেন। তাদের সেবা করতেন। হাদিসে এসেছে- হযরত আনাস রা. বর্ণনা করেন এক ইয়াহুদি গোলাম রাসূলুল্লাহ্ সা.-এর খেদমত করত। যখন সে অসুস্থ হল, তখন রাসূলুল্লাহ্ সা. তাকে দেখতে গেলেন, তার মাথার দিকে বসলেন আর তাকে বললেন, ‘তুমি ইসলাম গ্রহণ করো! তখন সে তার পিতার দিকে দেখল। পিতা বললেন, তুমি আবুল কাসেমের অনুসরণ করো। ফলে সে ইসলাম গ্রহণ করল। তখন রাসূলুল্লাহ্ সা. এই বলে বের হলেন,  ‘আল্লাহর শুকরিয়া যে, যিনি তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়েছেন।’ (বুখারী) 

সুতরাং কোনও অমুসলিম প্রতিবেশী যদি অসুস্থ হয় বা বিপদাপদে পড়ে তবে তার সেবা-যত্ন বা সুস্থতায় কিংবা সহযোগিতায় এগিয়ে যাওয়া প্রত্যেক প্রতিবেশির নৈতিক দায়িত্ব। অসুস্থতার সময় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করাই ইসলামের সুমহান শিক্ষা।

তাই কোনও অমুসলিম প্রতিবেশী অসুস্থ হলে কিংবা বিপদে পড়লে তাকে দেখতে যাওয়া, তার সেবা-যত্ন করার কেউ না থাকলে তাকে সেবা করা ইসলামে নিষেধ নয়। বরং শরিয়তের হুকুম রক্ষা করে, পর্দার হুকুম থাকলে তা মেনেই অমুসলিম প্রতিবেশী, অসুস্থ ব্যক্তি কিংবা বিপদে পড়া প্রতিবেশীর সহযোগিতায় এগিয়ে যাওয়ায় কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই।

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

অমুসলিম প্রতিবেশী অসুস্থ হলে কী করব?

আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, বৃহস্পতিবার

পুবের কলম, দ্বীন দুনিয়া ওয়েবডেস্ক: মানুষ সামাজিক জীব। সমাজবদ্ধ জীবনে সব ধর্ম বর্ণ ও গোত্রের মানুষই এক সঙ্গে বসবাস করে। তাই কোনও মুসলিম ব্যক্তির প্রতিবেশী যদি অমুসলিম হয়, তার অধিকারের প্রতিও খেয়াল রাখা জরুরি। এটিও প্রতিবেশীর হকের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ্তায়ালার ঘোষণা,  ‘দ্বীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদের নিজেদের দেশ থেকে বের করে দেয়নি তাদের প্রতি মহানুভবতা প্রদর্শন ও ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ্ তোমাদের নিষেধ করেননি। আল্লাহ্ তো ন্যায়পরায়ণদের ভালোবাসেন।’ (সূরা মুমতাহিনা, আয়াতঃ ৮) 

তাই কোনওভাবেই অমুসলিম প্রতিবেশীর অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ বা জুলুম করা যাবে না। আবার কোনও অমুসলিম প্রতিবেশী অসুস্থ হলে তার সেবা করাও ইসলামে নিষেধ নয়। কোনও অমুসলিমের প্রতি জুলুম করার অধিকার বা অনুমতি ইসলাম কাউকেই দেয়নি। হাদিসে এসেছে,  রাসূলুল্লাহ্ সা. কারও ওপর জুলুম করতে নিষেধ করেছেন, যদিও মজলুম অমুসলিম হয়। তিনি (সা.) বলেন,  ‘তোমরা মজলুমের বদদোয়া থেকে বেঁচে থেকো, যদিও সে অবিশ্বাসী হয়। তার মাঝখানে আর আল্লাহর মাঝখানে কোনও পর্দা থাকে না। অর্থাৎ তার বদদোয়াও দ্রুত কবুল হয়ে যায়।’ (মুসনাদে আহমাদ) 

বিভিন্ন সময় এমন অনেক প্রশ্ন শুনতে হয় যে, অমুসলিম প্রতিবেশী যদি অসুস্থ হয়, তবে তাকে দেখতে যাওয়া বা তার সেবা করা যাবে কিনা? হ্যাঁ, অমুসলিম প্রতিবেশী যদি অসুস্থ হয়, তবে তাকে সহযোগিতা করা বা সেবা-যত্ন করায় ইসলামে কোনও বাঁধা নেই। রাসূলুল্লাহ্ সা. অমুসলিম অসুস্থ প্রতিবেশীকে দেখতে গেছেন মর্মে হাদিসেই এর প্রমাণ রয়েছে।

অমুসলিম রোগীকে দেখতে যাওয়াও সুন্নত। রাসূলুল্লাহ্ সা. অমুসলিম রোগীদের দেখতে যেতেন এবং তাদের ঈমানের দাওয়াত দিতেন। তাদের সেবা করতেন। হাদিসে এসেছে- হযরত আনাস রা. বর্ণনা করেন এক ইয়াহুদি গোলাম রাসূলুল্লাহ্ সা.-এর খেদমত করত। যখন সে অসুস্থ হল, তখন রাসূলুল্লাহ্ সা. তাকে দেখতে গেলেন, তার মাথার দিকে বসলেন আর তাকে বললেন, ‘তুমি ইসলাম গ্রহণ করো! তখন সে তার পিতার দিকে দেখল। পিতা বললেন, তুমি আবুল কাসেমের অনুসরণ করো। ফলে সে ইসলাম গ্রহণ করল। তখন রাসূলুল্লাহ্ সা. এই বলে বের হলেন,  ‘আল্লাহর শুকরিয়া যে, যিনি তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়েছেন।’ (বুখারী) 

সুতরাং কোনও অমুসলিম প্রতিবেশী যদি অসুস্থ হয় বা বিপদাপদে পড়ে তবে তার সেবা-যত্ন বা সুস্থতায় কিংবা সহযোগিতায় এগিয়ে যাওয়া প্রত্যেক প্রতিবেশির নৈতিক দায়িত্ব। অসুস্থতার সময় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করাই ইসলামের সুমহান শিক্ষা।

তাই কোনও অমুসলিম প্রতিবেশী অসুস্থ হলে কিংবা বিপদে পড়লে তাকে দেখতে যাওয়া, তার সেবা-যত্ন করার কেউ না থাকলে তাকে সেবা করা ইসলামে নিষেধ নয়। বরং শরিয়তের হুকুম রক্ষা করে, পর্দার হুকুম থাকলে তা মেনেই অমুসলিম প্রতিবেশী, অসুস্থ ব্যক্তি কিংবা বিপদে পড়া প্রতিবেশীর সহযোগিতায় এগিয়ে যাওয়ায় কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই।