১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিশুদের কাফসিরাপ নিয়ে নির্দেশিকা জারি করতে চলেছে বিশ্ব জাতীয় সংস্থা, ‘হু’

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ২৪ জানুয়ারী ২০২৩, মঙ্গলবার
  • / 9

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: কাফসিরাপ খেয়ে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় হয়েছে গোটা বিশ্ব। এবার শিশুদের কাফসিরাপ নিয়ে নির্দেশিকা জারি করতে চলেছে বিশ্ব জাতীয় সংস্থা (হু)।

‘হু’-এর মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস মঙ্গলবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, ‘তাদের কাছে এই মুহূর্তে সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল, যাতে রোগ প্রতিরোধমূলক ওষুধ খেয়ে আর কারুর মৃত্যু না ঘটে’।

বিশ্ব জাতীয় সংস্থা আরও জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই কম্বোডিয়া, ফিলিপাইন্স, পূর্ব তিমুর ও সেনেগালে এই কাশির সিরাপগুলি সম্ভবত বিক্রি করা হয়েছে। প্রয়োজনে তদন্তের ক্ষেত্র আরও প্রসারিত করা হবে। ‘হু’ বিশ্বব্যাপি দেশের সরকার সহ ওষুধ প্রস্তুতকারী শিল্পকে নিম্নমানের ওষুধ তৈরিকে সমূলে বিনাশ করে জরুরি পরীক্ষা শুরুর আহ্বান জানিয়েছে। মার্গারেট হ্যারিস জানিয়েছেন, সম্ভবত আজকের পরে তারা কাফসিরাপ নিয়ে আরও বিস্তারিতভাবে তদন্তের গতিপ্রকৃতি জানাতে পারবেন।

গত ২০২২ সালে কাফসিরাপ খেয়ে কিডনি বিকল হয়ে শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে গাম্বিয়ায়। তার কিছুদিন পরে ইন্দোনেশিয়া ও উজবেকিস্তানেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়। তিনটি দেশে প্রায় তিনশোর বেশি শিশু মৃত্যুর ঘটনায় দূষিত কাফসিরাপ প্রস্তুতকারী সংস্থার সঙ্গে যোগসূত্র জানতে তদন্ত শুরু করে হু। শিশুদের জন্য তৈরি কাশির সিরাপগুলিতে বিষাক্ত রাসায়নিক পাওয়া গিয়েছিল বলে দাবি করে বিশ্ব জাতীয় সংস্থা।
সাম্প্রতিক মৃত্যুর সঙ্গে যুক্ত ভারত এবং ইন্দোনেশিয়ার ছয়টি প্রস্তুতকারকের দ্বারা ব্যবহৃত নির্দিষ্ট কাঁচামাল সম্পর্কে আরও তথ্য চাওয়া হয়েছে। কাঁচামাল সরবরাহ একই জায়গা থেকে হয়েছিল কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে ‘হু’ কোনও সরবরাহকারীদের নাম জানায়নি। বিশ্বে শিশুদের জন্য কাফসিরাপ কতটা নিরাপদ সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আপাতত সমস্ত তথ্য প্রমাণ জোগাড় করছে হু।

কাশির সিরাপগুলির নমুনায় অতিরিক্ত মাত্রায় ইথিলেনেগ্লাইকল এবং ডাইথাইলেনিগ্লাইকোল পাওয়া যায়, যা বিপজ্জনক রাসায়নিক। এই ধরনের রাসায়নিক কোনও ওষুধে থাকা উচিত নয়। এখনও পর্যন্ত ভারত ও ইন্দোনেশিয়া মিলিয়ে ৬টি কাশির ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাকে চিহ্নিত করেছে ‘হু’। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির নির্মাতারা তদন্ত সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে।

‘হু’ ইতিমধ্যেই দুটি ভারতীয় কাফসিরাপ নির্মাতা মেডেন ফার্মাসিউটিক্যালস এবং মেরিয়ন বায়োটেক দ্বারা তৈরি কাশির সিরাপগুলির জন্য নির্দিষ্ট সতর্কতা জারি করেছে। মেডেন এবং মেরিয়নের উৎপাদন কারখানা দুটিই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মেডেন এখন আবার খুলতে চাইছে। ভারত সরকার ডিসেম্বরে বলেছিল যে, তার পরীক্ষায় মেডেনের পণ্যগুলির মধ্যে কোনও সমস্যা পাওয়া যায়নি।
মেডেনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর নরেশ কুমার গয়াল জানিয়েছেন, কোম্পানির নিরাপত্তার খাতিরে হু-এর করা তদন্ত নিয়ে তারা কিছু বলতে রাজি নন।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

শিশুদের কাফসিরাপ নিয়ে নির্দেশিকা জারি করতে চলেছে বিশ্ব জাতীয় সংস্থা, ‘হু’

আপডেট : ২৪ জানুয়ারী ২০২৩, মঙ্গলবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: কাফসিরাপ খেয়ে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় হয়েছে গোটা বিশ্ব। এবার শিশুদের কাফসিরাপ নিয়ে নির্দেশিকা জারি করতে চলেছে বিশ্ব জাতীয় সংস্থা (হু)।

‘হু’-এর মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস মঙ্গলবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, ‘তাদের কাছে এই মুহূর্তে সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল, যাতে রোগ প্রতিরোধমূলক ওষুধ খেয়ে আর কারুর মৃত্যু না ঘটে’।

বিশ্ব জাতীয় সংস্থা আরও জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই কম্বোডিয়া, ফিলিপাইন্স, পূর্ব তিমুর ও সেনেগালে এই কাশির সিরাপগুলি সম্ভবত বিক্রি করা হয়েছে। প্রয়োজনে তদন্তের ক্ষেত্র আরও প্রসারিত করা হবে। ‘হু’ বিশ্বব্যাপি দেশের সরকার সহ ওষুধ প্রস্তুতকারী শিল্পকে নিম্নমানের ওষুধ তৈরিকে সমূলে বিনাশ করে জরুরি পরীক্ষা শুরুর আহ্বান জানিয়েছে। মার্গারেট হ্যারিস জানিয়েছেন, সম্ভবত আজকের পরে তারা কাফসিরাপ নিয়ে আরও বিস্তারিতভাবে তদন্তের গতিপ্রকৃতি জানাতে পারবেন।

গত ২০২২ সালে কাফসিরাপ খেয়ে কিডনি বিকল হয়ে শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে গাম্বিয়ায়। তার কিছুদিন পরে ইন্দোনেশিয়া ও উজবেকিস্তানেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়। তিনটি দেশে প্রায় তিনশোর বেশি শিশু মৃত্যুর ঘটনায় দূষিত কাফসিরাপ প্রস্তুতকারী সংস্থার সঙ্গে যোগসূত্র জানতে তদন্ত শুরু করে হু। শিশুদের জন্য তৈরি কাশির সিরাপগুলিতে বিষাক্ত রাসায়নিক পাওয়া গিয়েছিল বলে দাবি করে বিশ্ব জাতীয় সংস্থা।
সাম্প্রতিক মৃত্যুর সঙ্গে যুক্ত ভারত এবং ইন্দোনেশিয়ার ছয়টি প্রস্তুতকারকের দ্বারা ব্যবহৃত নির্দিষ্ট কাঁচামাল সম্পর্কে আরও তথ্য চাওয়া হয়েছে। কাঁচামাল সরবরাহ একই জায়গা থেকে হয়েছিল কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে ‘হু’ কোনও সরবরাহকারীদের নাম জানায়নি। বিশ্বে শিশুদের জন্য কাফসিরাপ কতটা নিরাপদ সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আপাতত সমস্ত তথ্য প্রমাণ জোগাড় করছে হু।

কাশির সিরাপগুলির নমুনায় অতিরিক্ত মাত্রায় ইথিলেনেগ্লাইকল এবং ডাইথাইলেনিগ্লাইকোল পাওয়া যায়, যা বিপজ্জনক রাসায়নিক। এই ধরনের রাসায়নিক কোনও ওষুধে থাকা উচিত নয়। এখনও পর্যন্ত ভারত ও ইন্দোনেশিয়া মিলিয়ে ৬টি কাশির ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাকে চিহ্নিত করেছে ‘হু’। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির নির্মাতারা তদন্ত সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে।

‘হু’ ইতিমধ্যেই দুটি ভারতীয় কাফসিরাপ নির্মাতা মেডেন ফার্মাসিউটিক্যালস এবং মেরিয়ন বায়োটেক দ্বারা তৈরি কাশির সিরাপগুলির জন্য নির্দিষ্ট সতর্কতা জারি করেছে। মেডেন এবং মেরিয়নের উৎপাদন কারখানা দুটিই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মেডেন এখন আবার খুলতে চাইছে। ভারত সরকার ডিসেম্বরে বলেছিল যে, তার পরীক্ষায় মেডেনের পণ্যগুলির মধ্যে কোনও সমস্যা পাওয়া যায়নি।
মেডেনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর নরেশ কুমার গয়াল জানিয়েছেন, কোম্পানির নিরাপত্তার খাতিরে হু-এর করা তদন্ত নিয়ে তারা কিছু বলতে রাজি নন।