Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the login-customizer domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u419551674/domains/puberkalom.in/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
‘ইনশাল্লাহ’ কেন বলতে হয়? | Puber Kalom
১৬ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘ইনশাল্লাহ’ কেন বলতে হয়?

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২২ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার
  • / 6

আহমদ হাসান ইমরান:  মুসলিমদের যেকোনও কাজ শুরু করার আগে ‘বিসমিল্লাহ হির রাহমানির রহিম’ অর্থাৎ ‘পরম করুণাময়, দয়াময় আল্লাহর নামে শুরু করছি’।  আর সেইসঙ্গে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে , ‘আল্লাহতে বিশ্বাসী মুসলিমরা ভবিষ্যতে কোনও কাজ করার কথা বললে তাকে অবশ্যই ‘ইনশাল্লাহ’ বলা উচিত।’ ‘ইনশাল্লাহ’ শব্দটির অর্থ হল ‘যদি আল্লাহ্ চান’। ইংরেজিতে বললে  বলতে হয় ‘ইফ গড উইলস’, ‘যদি ঈশ্বর ইচ্ছা করেন’। এটা এজন্য বলতে বলা হয়েছে, মানুষ কোনও নিয়ত বা অভিপ্রায় করে কিংবা পরিকল্পনা করে, আর সেটা কাউকে বলে, তাহলে আল্লাহর উপর ভরসা করেই বলা উচিত।  কারণ, সেই কাজটি শেষ পর্যন্ত হবে কি না তা নির্ভর করে আল্লাহর উপর। তাই বিশ্বাসীরা সবসময় ভবিষ্যতের  কোনও কাজ বা পরিকল্পনার ক্ষেত্রে ‘ইনশাল্লাহ’ শব্দটি  ব্যবহার করে। এর দ্বারা আল্লাহর উপর ভরসা ও আস্থা  প্রকাশ পায়।

পবিত্র কুরআনে এই সম্পর্কে একটি সুন্দর দৃষ্টান্ত দেওয়া  হয়েছে। সূরা কলম-এ তা আল্লাহ্ বিবৃত করেছেন।  ‘আমি তাদেরকে পরীক্ষা করেছি যেভাবে পরীক্ষা করেছিলাম বাগানের মালিকদেরকে যখন তারা শপথ করেছিল যে, প্রত্যুষেই তারা বাগান থেকে ফল কেটে নেবে (কিন্তু) তারা ইনশাল্লাহ বলেনি। অতঃপর তোমার প্রতিপালকের নিকট হতে এক আযাব অবতীর্ণ হল সেই বাগানে, যখন তারা নিদ্রিত ছিল। ফলে বাগান পুড়ে ছাই  বর্ণ ধারণ করল। প্রভাতে তারা একে অপরকে ডেকে বলল, তোমরা যদি ফল কাটতে (সংগ্রহ) চাও তবে  সকাল সকাল বাগানে চল। অতঃপর তারা চলল ফিসফিস করে কথা বলতে বলতে। আজ বাগানে যেন তোমাদের নিকট কোনও অভাবগ্রস্ত ব্যক্তি প্রবেশ করতে না পারে। এরপর তারা অভাবীদের প্রতিহত করতে সক্ষম এই বিশ্বাস নিয়ে প্রভাতকালে (নিজেদের বাগানে) যাত্রা করল। অতঃপর তারা যখন ওই বাগান প্রত্যক্ষ করল, তারা বলল, আমরা তো দিশা হারিয়ে ফেলেছি, (না) বরং আমরাই বঞ্চিত হয়েছি। তাদের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি বলল, আমি কী তোমাদেরকে বলিনি? যদি তোমরা আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করতে। তখন তারা বলল, আমরা আমাদের  প্রতিপালকের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছি, আমরা অত্যাচারি ছিলাম। এভাবে তারা একে অপরকে দোষ দিতে লাগল। তারা বলল, হায়, দুর্ভোগ আমাদের! আমরা তো ছিলাম সীমালঙ্ঘনকারী। আমরা আশা রাখি, আমাদের রব এর পরিবর্তে আমাদেরকে দেবেন উৎকৃষ্টতর বাগান। আমরা আমাদের রব-এর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী। শাস্তি এভাবেই এসে থাকে এবং পরকালের শাস্তি কঠিনতর হবে, যদি তারা জানত।’ (সূরা কলম, আয়াত, ১৭-৩৩)

এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, বাগানের মালিকরা আল্লাহর উপর ভরসা করে ‘ইনশাল্লাহ’ বলেনি। তারা নিশ্চিত ছিল যে,  তাদের ফলে পরিপূর্ণ বাগান তাদের জন্য নিরাপদ থাকবে। কেউ এর ক্ষতি করতে পারবে না। আল্লাহর উপর বিশ্বাস  না থাকায় আল্লাহ্ এই গর্বিত মালিকদের শাস্তি দিলেন। দ্বিতীয়ত, এই বাগান মালিকরা ছিল খুবই কৃপণ। তারা কোনও অভাবগ্রস্তকে সাহায্য না করার অভিপ্রায় করেছিল। এটা করুণাময় আল্লাহ্ পছন্দ করেননি। কারণ  আল্লাহ্ সবসময় দুর্বল, মজলুম ও অভাবগ্রস্তদের পাশে থাকার জন্য ঈমানদারদের তাগিদ দিয়েছেন। তাই অভাবগ্রস্তদের বাগানে ঢুকতে দেব না, এই মনোবৃত্তির জন্য তাদের বাগানকে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

পবিত্র কুরআন শরীফের এই নির্দেশ থেকে আমরা জানতে পারি, বিশ্বাসী মুসলিমদের প্রত্যেক কাজের অভিপ্রায় জানানোর আগে ‘ইনশাল্লাহ’ বলতে হবে। অর্থাৎ যদি আল্লাহ্ চান।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

‘ইনশাল্লাহ’ কেন বলতে হয়?

আপডেট : ২২ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার

আহমদ হাসান ইমরান:  মুসলিমদের যেকোনও কাজ শুরু করার আগে ‘বিসমিল্লাহ হির রাহমানির রহিম’ অর্থাৎ ‘পরম করুণাময়, দয়াময় আল্লাহর নামে শুরু করছি’।  আর সেইসঙ্গে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে , ‘আল্লাহতে বিশ্বাসী মুসলিমরা ভবিষ্যতে কোনও কাজ করার কথা বললে তাকে অবশ্যই ‘ইনশাল্লাহ’ বলা উচিত।’ ‘ইনশাল্লাহ’ শব্দটির অর্থ হল ‘যদি আল্লাহ্ চান’। ইংরেজিতে বললে  বলতে হয় ‘ইফ গড উইলস’, ‘যদি ঈশ্বর ইচ্ছা করেন’। এটা এজন্য বলতে বলা হয়েছে, মানুষ কোনও নিয়ত বা অভিপ্রায় করে কিংবা পরিকল্পনা করে, আর সেটা কাউকে বলে, তাহলে আল্লাহর উপর ভরসা করেই বলা উচিত।  কারণ, সেই কাজটি শেষ পর্যন্ত হবে কি না তা নির্ভর করে আল্লাহর উপর। তাই বিশ্বাসীরা সবসময় ভবিষ্যতের  কোনও কাজ বা পরিকল্পনার ক্ষেত্রে ‘ইনশাল্লাহ’ শব্দটি  ব্যবহার করে। এর দ্বারা আল্লাহর উপর ভরসা ও আস্থা  প্রকাশ পায়।

পবিত্র কুরআনে এই সম্পর্কে একটি সুন্দর দৃষ্টান্ত দেওয়া  হয়েছে। সূরা কলম-এ তা আল্লাহ্ বিবৃত করেছেন।  ‘আমি তাদেরকে পরীক্ষা করেছি যেভাবে পরীক্ষা করেছিলাম বাগানের মালিকদেরকে যখন তারা শপথ করেছিল যে, প্রত্যুষেই তারা বাগান থেকে ফল কেটে নেবে (কিন্তু) তারা ইনশাল্লাহ বলেনি। অতঃপর তোমার প্রতিপালকের নিকট হতে এক আযাব অবতীর্ণ হল সেই বাগানে, যখন তারা নিদ্রিত ছিল। ফলে বাগান পুড়ে ছাই  বর্ণ ধারণ করল। প্রভাতে তারা একে অপরকে ডেকে বলল, তোমরা যদি ফল কাটতে (সংগ্রহ) চাও তবে  সকাল সকাল বাগানে চল। অতঃপর তারা চলল ফিসফিস করে কথা বলতে বলতে। আজ বাগানে যেন তোমাদের নিকট কোনও অভাবগ্রস্ত ব্যক্তি প্রবেশ করতে না পারে। এরপর তারা অভাবীদের প্রতিহত করতে সক্ষম এই বিশ্বাস নিয়ে প্রভাতকালে (নিজেদের বাগানে) যাত্রা করল। অতঃপর তারা যখন ওই বাগান প্রত্যক্ষ করল, তারা বলল, আমরা তো দিশা হারিয়ে ফেলেছি, (না) বরং আমরাই বঞ্চিত হয়েছি। তাদের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি বলল, আমি কী তোমাদেরকে বলিনি? যদি তোমরা আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করতে। তখন তারা বলল, আমরা আমাদের  প্রতিপালকের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছি, আমরা অত্যাচারি ছিলাম। এভাবে তারা একে অপরকে দোষ দিতে লাগল। তারা বলল, হায়, দুর্ভোগ আমাদের! আমরা তো ছিলাম সীমালঙ্ঘনকারী। আমরা আশা রাখি, আমাদের রব এর পরিবর্তে আমাদেরকে দেবেন উৎকৃষ্টতর বাগান। আমরা আমাদের রব-এর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী। শাস্তি এভাবেই এসে থাকে এবং পরকালের শাস্তি কঠিনতর হবে, যদি তারা জানত।’ (সূরা কলম, আয়াত, ১৭-৩৩)

এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, বাগানের মালিকরা আল্লাহর উপর ভরসা করে ‘ইনশাল্লাহ’ বলেনি। তারা নিশ্চিত ছিল যে,  তাদের ফলে পরিপূর্ণ বাগান তাদের জন্য নিরাপদ থাকবে। কেউ এর ক্ষতি করতে পারবে না। আল্লাহর উপর বিশ্বাস  না থাকায় আল্লাহ্ এই গর্বিত মালিকদের শাস্তি দিলেন। দ্বিতীয়ত, এই বাগান মালিকরা ছিল খুবই কৃপণ। তারা কোনও অভাবগ্রস্তকে সাহায্য না করার অভিপ্রায় করেছিল। এটা করুণাময় আল্লাহ্ পছন্দ করেননি। কারণ  আল্লাহ্ সবসময় দুর্বল, মজলুম ও অভাবগ্রস্তদের পাশে থাকার জন্য ঈমানদারদের তাগিদ দিয়েছেন। তাই অভাবগ্রস্তদের বাগানে ঢুকতে দেব না, এই মনোবৃত্তির জন্য তাদের বাগানকে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

পবিত্র কুরআন শরীফের এই নির্দেশ থেকে আমরা জানতে পারি, বিশ্বাসী মুসলিমদের প্রত্যেক কাজের অভিপ্রায় জানানোর আগে ‘ইনশাল্লাহ’ বলতে হবে। অর্থাৎ যদি আল্লাহ্ চান।