হিন্দুদের ট্রাস্টে মুসলিমদের জায়গা দেবেন? ওয়াকফ মামলায় কেন্দ্রকে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের

- আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার
- / 60
পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ওয়াকফ আইন নিয়ে বুধবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানি ছিল। ওয়াকফ আইন নিয়ে শুনানি চলাকালীন কেন্দ্রের আইন নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তোলে আদালত। ওয়াকফ বোর্ডের ২২ জন সদস্যের মধ্যে মাত্র ৮ জন মুসলিম। ৮ জন মুসলিম কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে আদালত। এ নিয়ে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার সঙ্গে কার্যত বাগযুদ্ধ হয় সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার। সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চে মামলার শুনানি হওয়া উচিত নয় বলে মন্তব্য করেন মেহতা। এই মন্তব্যের পর প্রধান বিচারপতি বলেন, “বিচারপতির আসনে যখন বসি আমরা, ধর্ম থাকে না আমাদের। আমাদের কাছে সবপক্ষই সমান।”। এর পরই প্রধান বিচারপতি জানতে চান, “তার মানে কি বলতে চাইছেন, হিন্দুদের দাতব্য ট্রাস্টের বোর্ডে মুসলিমদের জায়গা হবে? প্রকাশ্যে বলুন।” তিনি আরও বলেন, “২৬ নম্বর ধারা ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে। এটা সব সম্প্রদায়ের জন্য প্রযোজ্য।”
আরও পড়ুন: ওয়াইসিই ‘বিগ বস’; আসল লড়াই এআইএমআইএম এবং বিজেপির মধ্যে: কিষাণ রেড্ডি
এদিনই অন্তর্বর্তী রায় দেওয়ার কথা বলতে শোনা যায় প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার মুখে। কিন্তু সলিসিটর তুষার মেহতা আরও একটি দিন সময় চান। সরকারের বক্তব্য আরও একদিন শোনার আবেদন জানান তিনি। তাতে সায় দেন প্রধান বিচারপতি। বৃহস্পতিবার দুপুরে ফের সরকারের কথা শুনবে শীর্ষ আদালত। এদিন আদালত প্রস্তাব দিয়েছিল, ইতিমধ্যেই আদালত যে সমস্ত সম্পত্তিকে ওয়াকফ ঘোষণা করেছে, তাতে কোনও পরিবর্তন ঘটানো যাবে না। ওয়াকফ বোর্ড এবং কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কমিটির সমস্ত সদস্য মুসলিম হতে হবে, ব্যতিক্রম শুধু পদের দৌলতে বোর্ডের সদস্যপদ পাওয়া ব্যক্তিরা। শুধু তাই নয়, হিন্দুদের দাতব্য ট্রাস্টে মুসলিমদের জায়গা দেওয়া হবে কি, কেন্দ্রের কাছে জানতেও চায় শীর্ষ আদালত।
বুধবার শী্র্ষ আদালত অন্তর্বর্তী প্রস্তাব দেয়, আদালতে কোনও সম্পত্তি যদি ওয়াকফ বলে চিহ্নিত হয়ে থাকে, সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে শুনানি চলাকালীন কোনও মতেই সেটিতে রদবদল ঘটানো যাবে না। সেই সম্পত্তি কোনও ব্যক্তি ওয়াকফ হিসেবে দান করে থাকুন বা ওয়াকফ চুক্তি হয়ে থাকুক, সব ক্ষেত্রেই এই নির্দেশ প্রযোজ্য। কোনও সম্পত্তি ওয়াকফ না কি সরকারি সম্পত্তি, জেলাশাসকের নির্দেশে তদন্ত চলাকালীন সেই সম্পত্তিকে ওয়াকফ বলে গন্য করা হবে না বলে উল্লেখ রয়েছে আইনে। কিন্তু এখনই সেই নির্দেশ কার্যকর হবে না বলে জানিয়েছে আদালত। ওয়াকফ বোর্ড এবং কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কমিটির সব সদস্যকে মুসলিম হতে হবে। একমাত্র ব্যতিক্রম সরকারি আধিকারিক অথবা কোনও পক্ষের প্রতিনিধি হওয়ার দরুণ যাঁরা আপনা আপনিই বোর্ডের সদস্যপদ পান, তাঁদের ক্ষেত্রে ধর্মপরিচয় বাধ্যতামূলক নয়। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না, বিচারপতি সঞ্জয়কুমার এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চে ওয়াকফ বিরোধী মোট ৭৩টি আবেদনের শুনানি চলছে।